ছবি রয়টার্স।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গা নিয়ে দিল্লি বিধানসভার শান্তি ও সম্প্রীতি কমিটিতে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ল ফেসবুক। দিল্লি দাঙ্গার সময় এবং তার পরেও একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে, দাঙ্গা ও বিদ্বেষমূলক বিষয়বস্তুর প্রচার বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ পদক্ষেপ করেনি ফেসবুক। সে সব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার দিল্লি বিধানসভার শান্তি ও সম্প্রীতি কমিটি ফেসবুকের পাবলিক পলিসি টিমের সদস্য এবং বোর্ড অব ডিরেক্টরদের ধর্মীয় পরিচয় নিয়েও জানতে চায় সংস্থার কাছে।
এ দিন কড়া সমালোচনা ও ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ঘৃণা ও বিদ্বেষমূলক পোস্ট নিয়ে প্রশ্নের মুখে সংস্থার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর শিবনাথ ঠুকরাল বলেন, ‘‘ঘৃণা আমাদের কষ্ট দেয়। আমরা আমাদের প্ল্যাটফর্মে ঘৃণা চাই না। বিজ্ঞাপনদাতারাও চান না। আমরা লাগাতার এ নিয়ে কাজ করে চলেছি।’’ যদিও শিবনাথের এই দাবি মানতে নারাজ অনেকেই। বস্তুত গত বছর দিল্লি দাঙ্গার আগে-পরে ফেসবুকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের সূত্রেই নাম ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া সাইটটির তৎকালীন পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাসের। হিন্দুত্ববাদী একটি ছাত্র সংগঠনের নেত্রীর দিদি আঁখি দাসের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠার পরে তাঁকে সরিয়ে দেয় ফেসবুক। তার পরেও তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের শাসক দলের প্রতি নরম মনোভাব দেখানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার।
এই আবহে এ দিন শুনানির সময় দিল্লি দাঙ্গার সময় ফেসবুকে পোস্ট হওয়া বিভিন্ন বিদ্বেষমূলক বিষয়বস্তু নিয়ে ওঠা অভিযোগ এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। দিল্লি বিধানসভার শান্তি ও সম্প্রীতি কমিটির প্রধান রাঘব চড্ডা পরে জানান, উত্তর-পূর্ব দিল্লি দাঙ্গার এক মাস আগে এবং দু’মাস পর পর্যন্ত বিভিন্ন বিতর্কিত এবং বিদ্বেষমূলক বিষয়বস্তু নিয়ে ওঠা অভিযোগের বিশদ এবং সেগুলি নিয়ে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ কমিটির কাছে পেশ করতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি কমিটির শুনানিতে জানতে চাওয়া হয়, নিয়োগের সময় সংস্থাটি সংখ্যালঘুদের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় কি না। এর জবাবে ঠুকরাল জানান, নিয়োগের সময় সংস্থা কারও ধর্ম সম্পর্কে জানতে চায় না। কমিটি প্রশ্ন তোলে, বিষয়বস্তু নিয়ে অভিযোগ এবং তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া কী? ঠুকরাল জানান, বিষয়বস্তু পোস্ট হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা খতিয়ে দেখা হয় এবং অভিযোগ পাওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়।