বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর— ফাইল চিত্র।
ভারত কখনওই আমেরিকা বা অন্য কোনও দেশের হাতের পুতুল ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। ঠিক এই ভাষাতেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কটাক্ষের জবাব দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান এখন চিনের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। তাই ভারতের বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রক্সি হওয়ার অভিযোগ তুলছে।’’
ইমরান খান সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, বেজিংকে ঠেকানোর দায়ে ওয়াশিংটনের আজ্ঞাবহ হয়েছে নয়াদিল্লি। আমেরিকা-সহ পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলি চিনের উত্থান ঠেকাতে ‘প্রক্সি’ হিসেবে ভারতকে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘চিনই একমাত্র দেশ যারা বরাবর আমাদের পাশে থেকেছে। তাই পাকিস্তানের ভবিষ্যৎকে চিনের ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছি আমরা।’’
ইমরানের অভিযোগ প্রসঙ্গে এস জয়শঙ্করের জবাব, ‘‘যাঁরা এমন কথা বলেন, তাঁরা সম্ভবত নিজেদের দেশের ইতিহাসটাই ব্যাখ্যা করেন।’’ তাঁর খোঁচা, কয়েক দশক ধরে আমেরিকার অনুগত হয়ে থাকার পরে গত এক দশকে পাকিস্তান সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিয়ে চিনের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ভারত বরাবরই তাঁর স্বকীয় চরিত্র বজায় রেখেছে।
আরও পড়ুন: পেটিএমে জুয়ার ফাঁদ, চিনা অনলাইন বেটিং নিয়ে তদন্তে ইডি
তবে বিশ্ব রাজনীতির বদলে যাওয়া প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লি যে অনেক কাছাকাছি এসেছে এদিন তা খোলাখুলি স্বীকার করেছেন বিদেশমন্ত্রী। কয়েক সপ্তাহ আগে ‘ইন্ডিয়া গ্লোবাল উইক’ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সভাতে তাঁর বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে জানান, দু’দেশের সম্পর্ক এক দিনে গড়ে ওঠেনি। দীর্ঘ ছ’দশক সময় লেগেছে। আর এখন দ্রুত ব্যবধানটা মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। সেই সমন্বয় জোরদার হয়ে উঠছে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং দু’দেশের মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কে।
আরও পড়ুন: তিব্বতকে ‘দুর্ভেদ্য দুর্গ’ বানাতে মগজধোলাইয়ের বার্তা চিনফিংয়ের
ভারতের সুপ্রাচীন ইতিহাস এবং সভ্যতার প্রসঙ্গও এসেছে জয়শঙ্করের মন্তব্য। লাদাখে চিনা ফৌজের অনুপ্রবেশ ঘিরে টানাপড়েনের আবহেও তাঁর দাবি, নয়াদিল্লির বিদেশনীতির অভিমুখ নিছক কোনও রাষ্ট্রের বিরোধিতা করা হয়। আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারতের নয়া সামরিক বোঝাপড়ার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের মোকাবিলা নয় বলেও দাবি করেন তিনি।