বোমা বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডিটোনেটর থাকলে যে কোনও সময় বড় সড় বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব হত ওই বিস্ফোরক দিয়ে। —নিজস্ব চিত্র।
শালিমার থেকে মু্ম্বই যাওয়া ট্রেনের কামরায় মিলল সন্দেহজনক প্যাকেট। ওই প্যাকেটে ছিল বিস্ফোরকের মতো পদার্থ, সঙ্গে ব্যাটারিও। ওই বিস্ফোরক নিস্ক্রিয় করে বোমা বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডিটোনেটর থাকলে যে কোনও সময় বড় সড় বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব হত ওই বিস্ফোরক দিয়ে। বিস্ফোরকে মুড়ে রাখা প্যাকেটে একটি হাতে লেখা কাগজ পাওয়া গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর সেখানে লেখা — ‘‘হম ক্যায়া কর সকতা হ্যায় ও বিজেপি-কো দিখানা হ্যায়।”
সোমবার শালিমার থেকে মুম্বইয়ের লোকমান্য তিলক টার্মিনাসের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল কুরলা এক্সপ্রেস। বুধবার ভোরবেলা ট্রেনটি লোকমান্য তিলক স্টেশনে পৌঁছয়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সেই সময়ে একটি স্লিপার কোচের সাইড বার্থের তলায় সন্দেহজনক প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখা যায়। একটি হিন্দি খবরের কাগজে মোড়া দাবিদারহীন ওই প্যাকেট দেখেই খবর দেওয়া হয় আরপিএফ-কে।
আরপিএফ সেই প্যাকেট থেকে জিলেটিন স্টিকের মতো দেখতে পাঁচটি স্টিক, ব্যাটারি, তার এবং একটি হাতে লেখা কাগজ উদ্ধার করে। সঙ্গে সঙ্গে প্যাকেটটি নিয়ে যাওয়া হয় রেলওয়ে সাইডিংয়ে। সেখানে বোমা বিশেষজ্ঞরা নিস্ক্রিয় করেন বিস্ফোরক। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, হিন্দি হরফে হাতে লেখা একটি কাগজ পাওয়া গিয়েছে ওই প্যাকেটে। সেখানে সার্কিটের মতো লাল কালিতে হাতে আঁকা একটি ছবিও মিলেছে। সেটা ইমপ্রোভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি)-এর সার্কিটের ছবি কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই কাগজে কিছু নির্দেশও লেখা রয়েছে। তা থেকে স্পষ্ট, প্যাকেটটি অন্য কারও ওই কামরা থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: বাহিনীতে বন্ধ করতে হবে ভিআইপি কালচার, দায়িত্ব নিয়েই নির্দেশ নতুন নৌসেনাপ্রধানের
তদন্তকারীদের একাংশের সন্দেহ, আইইডি-টি আংশিক ভাবে তৈরি করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এর পর যাদের ওই প্যাকেটটি সংগ্রহ করার কথা ছিল, তারাই সম্ভবত ওই আইইডি-টি ডিটোনেটর লাগিয়ে সম্পূর্ণ করত। তবে তদন্তকারীদেরই অন্য একটি অংশ উদ্ধার হওয়া স্টিকগুলিকে জিলেটিন স্টিক বলতে নারাজ। তাঁদের দাবি, ওগুলো জিলেটিন স্টিক নয় বরং বাজির সঙ্গে মিল রয়েছে তার মালমশলার। তাঁদের ধারণা, ভয় দেখানোর জন্য কেউ সুপরিকল্পিত ভাবে ওই প্যাকেটটি রেখেছিল।
আরও পড়ুন: ইদের সকালে পুলওয়ামায় বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে গুলি করে খুন করল জঙ্গিরা
তবে কোথা থেকে ওই প্যাকেটটি ট্রেনের কামরায় তোলা হয়েছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। নাশকতা না গোটা ব্যপারটা ভুয়ো তা নিয়ে এ দিন দুপুর পর্যন্ত সংশয় রয়েছে। তবে সূত্রের খবর, মুম্বই পুলিশের সন্ত্রাসবাদ দমন শাখার আধিকারিকরাও প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন। তাঁরা এখনই গোটা বিষয়টি ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কারা এর পিছনে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওই বিস্ফোরক উদ্ধারের পরই আরপিএফকে সতর্ক করা হয়েছে। মুম্বই পৌঁছনো এবং মুম্বইগামী ট্রেনে বাড়তি নজরদারি করা হচ্ছে। তল্লাশি চলছে বিভিন্ন স্টেশনেও।
(কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গুজরাত থেকে মণিপুর - দেশের সব রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)