ফাইল চিত্র।
গত কাল দৈনিক করোনা সংক্রমণ নেমেছিল ৩০ হাজারের নীচে। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ফের পাল্টে গেল পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৩,৬৫৪ জন। যা গত কালের চেয়ে ৪৭ শতাংশ বেশি। গত কালই প্রতিষেধক ব্যবস্থার জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান ভি কে পল সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, বিশ্বে অতিমারি এখনও শেষ হয়নি। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। এর পাশাপাশিই টিকাকরণের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, সংক্রমণ রোধ করতে কোনও প্রতিষেধকই ১০০ শতাংশ নিশ্চয়তা দিচ্ছে না। কিন্তু প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা এড়ানো সম্ভব। মৃত্যুর আশঙ্কাও কমবে।
১৮-র কম বয়সিদের প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য তৎপর কেন্দ্র। সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের এক বিশেষজ্ঞ কমিটি আজ দুই থেকে ১৭ বছর বয়সিদের উপরে কোভোভ্যাক্স প্রতিষেধকের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য সিরাম ইনস্টিটিউটকে অনুমোদন দেওয়ার সুপারিশ করেছে। ৯২০ জন শিশুর উপরে এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। এর মধ্যে ২ থেকে ১১ এবং ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের দু’টি দলের প্রতিটিতে রয়েছে ৪৬০ জন করে। ১০ কেন্দ্রে পরীক্ষা চালানো হবে।
এ দিকে প্রতিষেধক বাড়ানো নিয়ে নিয়ে রাজ্যগুলি বারেবারে কেন্দ্রের কাছে দরবারের জেরে এ বার রাজ্যগুলির প্রতিষেধকের পরিমাণ বাড়াতে পারে কেন্দ্র। এত দিন মোট প্রতিষেধকের মধ্যে রাজ্যগুলির জন্য বরাদ্দ ছিল ৭৫%। বাকি ২৫% রাখা হত বেসরকারি হাসপাতালগুলির জন্য। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালগুলি তাদের কোটার প্রতিষেধক সংগ্রহ না করায় টিকাকরণ প্রক্রিয়ায় আরও গতি আনা সম্ভব হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত বেসরকারি হাসপাতালের কোটার ২.২৮ কোটি প্রতিষেধক পড়েই রয়েছে। তাই রাজ্যগুলির কোটা ৭৫% থেকে আরও বাড়াতে পারে কেন্দ্র।
রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর পরিস্থিতি কেরলে। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২,১২৯ জন। যা দেশের মোট দৈনিক সংক্রমণের প্রায় ৫০ শতাংশ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত চার সপ্তাহ ধরেই কেরলে সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। ২৮ জুনের পর থেকে কোট্টায়ামে সংক্রমণ বেড়েছে ৬৪%, মলপ্পুরমে ৫৯%, এর্নাকুলমে ৪৬.৫% এবং ত্রিসুরে ৪৫.৪% বেড়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ কেরলের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরের সচিবকে লেখা চিঠিতে কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলিতে কড়াকড়ি আরও বাড়ানোর সুপারিশ করেছেন। রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকেরা কোভিড প্রোটোকল মানছেন না বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
পর্যটকদের ক্ষেত্রে কোভিড বিধি লঙ্ঘন করায় আজ উত্তরাখণ্ড সরকারকে ভর্ৎসনা করেছে নৈনিতাল হাই কোর্ট। অতিমারির জেরে ১৮ অগস্ট পর্যন্ত চারধাম যাত্রার উপরে নিষেধাজ্ঞাও চাপিয়েছে আদালত।
মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী আসলাম শেখ আজ আবেদন জানিয়েছেন, দু’ডোজ় প্রতিষেধক নিয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের যাতে পর্যটনে অনুমতি দেওয়া হয়।। রেস্তরাঁ খোলা রাখার সময়সীমা বাড়ানোর সওয়ালও জানিয়েছেন তিনি।