বর্তমানে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের অধিকাংশের শরীরে ওমিক্রনের এক্সবিবি১.১৬ প্রজাতির নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। ফাইল চিত্র।
ফি দিন দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, এখনও উদ্বেগের কোনও কারণ দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, বর্তমানে ওমিক্রনের যে প্রজাতিটির জন্য সংক্রমণ ঘটছে মারণক্ষমতার প্রশ্নে সেটি আদৌ তেমন শক্তিশালী নয়। তবে যে সব ব্যক্তি দীর্ঘ দিন ধরে গুরুতর কোনও (ক্রনিক) রোগে ভুগছেন, তাঁদের কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপরে জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
গত কাল দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি মানুষ। গত এক সপ্তাহ ধরে দেশে আক্রান্তের হার ২.০৯ শতাংশ। এই আবহে জিনোম পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে বর্তমানে যাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের অধিকাংশের শরীরে ওমিক্রনের এক্সবিবি১.১৬ প্রজাতির নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। এমসের সদ্য প্রাক্তন অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়ার মতে, এই প্রজাতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। এটি ভারতে দীর্ঘ সময় ধরে সক্রিয় রয়েছে। ওমিক্রন সংক্রমণ যখন এ দেশে শীর্ষে ছিল তখনও ওই প্রজাতির নমুনা আক্রান্তদের শরীরে পাওয়া গিয়েছে। তাই ওই প্রজাতির দ্বারা সংক্রমিত হলে বিশেষ চিন্তার কিছু নেই বলেই জানিয়েছেন গুলেরিয়া। তাঁর মতে, ওমিক্রনের অন্য প্রজাতিগুলির মতোই এটিরও মারণক্ষমতা কম। তবে যে সব করোনা রোগীর প্রবল জ্বর ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে তাঁদের দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।
অন্য শ্বাসকষ্টজনিত অসুখের মতোই করোনা সংক্রমণ ঘুরে ঘুরে আসার সম্ভাবনা থাকায় করোনার টিকা বিশেষ করে বুস্টার ডোজ় নেওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। পাশাপাশি জনবহুল এলাকায় অতীতের মতোই মাস্ক পরা ও ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার উপরে জোর দিয়ে নতুন করে প্রচার শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্য রামন গঙ্গাখেড়করের মতে, সংক্রমণ বাড়লেও, চিন্তার কিছু নেই। কারণ দেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ইতিমধ্যেই ওমিক্রন প্রজাতির মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর মতে, দেশে পরীক্ষা বাড়লে, আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়বে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লে তবেই চিন্তার কারণ রয়েছে। নচেৎ নয়। তাই সরকারের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, কোথাও অস্বাভাবিক ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কি না, মৃত্যু বেশি হচ্ছে কি না তা সর্বাগ্রে নজরে রাখার প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজনে বেশি করে আক্রান্তদের নমুনা সংগ্রহ করে তা জিনোম পরীক্ষায় পাঠানোর উপরে জোর দিয়েছেন তিনি। যাতে নতুন কোনও প্রজাতি সংক্রমণ ঘটাচ্ছে কি না তা জানা সম্ভব হয়।
অন্য দিকে মহারাষ্ট্রে ক্রমশই সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫০ জন।