অসম

গগৈয়ের গদি হারানোর হাওয়া স্পষ্ট সমীক্ষায়

মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ চতুর্থ বারের জন্য গদিতে বসার স্বপ্ন দেখছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন সর্বানন্দ সোনোয়াল।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৬ ০৩:১৫
Share:

মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ চতুর্থ বারের জন্য গদিতে বসার স্বপ্ন দেখছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আশায় বুক বেঁধেছেন সর্বানন্দ সোনোয়াল। নিজে মুখ্যমন্ত্রী না হলেও ‘কিংমেকার’ হয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হবেন বলে দাবি করেছেন এআইইউডিএফ প্রধান বদরুদ্দিন আজমল। ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই জানা যাবে কার স্বপ্ন সফল হবে। কিন্তু পাঁচ রাজ্যের ভোট পর্ব চুকতেই বিভিন্ন
টিভি চ্যানেল ও সমীক্ষাকারী সংস্থার নির্বাচন পরবর্তী সমীক্ষা বলছে, অসমে পালাবদল শুধু সময়ের অপেক্ষা। ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপিই। সমীক্ষা বলছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই ক্ষমতা দখল করবে বিজেপি-অগপ-বিপিএফ জোট।

Advertisement

১২৬ আসনের অসম বিধানসভায় ম্যাজিক সংখ্যা ৬৪। টিভিতে নির্বাচন-পরবর্তী সমীক্ষার ফল দেখানো শুরু হতেই বিজেপির হেঙেরাবাড়ি সদর দফতরে তৈরি হয়েছে উৎসবের আবহ। আর এই ফল কতখানি ভিত্তিহীন তা প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা চলছে রাজীব ভবনে।

ভোটের আগে জনমত সমীক্ষায় দেখা যায় অসমে কোনও দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। কংগ্রেসের থেকে বিজেপি বড়জোর ৫-৭টি আসন বেশি পাবে। তাই এআইইউডিএফের সাহায্য নিয়েই হয় কংগ্রেস না হলে বিজেপি জোটকে সরকার গড়তে হবে। কিন্তু সিংহভাগ নির্বাচন-পরবর্তী সমীক্ষাই বলছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই আসতে চলেছে বিজেপি জোট। নামনি অসম ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এআইইউডিএফের আধিপত্য আগের মতো থাকবে না বলে আঁচ করেছিলেন অনেকে। ওই ভোটে কংগ্রেস ভাগ বসাবে বলে ধারণা ছিল তাঁদের। সমীক্ষাতেও তারই প্রতিফলন। ২০টির বেশি আসনের দাবি করা আজমলের দলকে গড়ে ৬ থেকে ১০-এর বেশি আসন দেওয়াই হচ্ছে না।

Advertisement

বিদায়ী বিধানসভায় কংগ্রেস ৭৮টি, এআইইউডিএফ ১৮টি, অগপ ১০টি আসন পেয়েছিল। বিজেপির মুখপাত্র রূপম গোস্বামী বলেন, ‘‘লোকসভায় মোদী হাওয়ায় উড়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। এ বার সর্বার সুনামিতে ভেসে যাবে গগৈয়ের দল।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র আব্দুল খালেক বলছেন, ‘‘বরাবরই বলেছি, আমরা নির্বাচন-পরবর্তী সমীক্ষায় বিশ্বাস নেই। বহু বারই তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ১৯ মে শেষ হাসি তাঁরাই হাসবেন। এআইইউডিএফও এই সমীক্ষার ফলে বিশ্বাস রাখছে না। তারা নিশ্চিত ২০টির বেশি আসন তারা পাচ্ছেই। যে সব চ্যানেল সমীক্ষা চালিয়েছে তারাও ‘বিজেপি ঘেঁষা’ বলে অভিযোগ তুলেছে তারা।

তবে বড় জয় এবং গোটা উত্তর-পূর্বে আধিপত্যের মজবুত ভিত তৈরির স্বাদ পেয়ে বিজেপি এখনই মন্ত্রিসভার হিসেব শুরু করেছে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী সর্বানন্দ সোনোয়াল এ দিনই বিজয়ী নেতার ‘প্রতিক্রিয়া’ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। ৮০%-র বেশি ভোট পড়াই তার প্রমাণ।’’

বিজেপির কাছে এ বারের জয় ছিল ‘নাও অর নেভার’-এর লড়াই। এই পর্বে যে পাঁচটি রাজ্যে ভোট হল, তার মধ্যে একমাত্র অসমেই বিজেপির কিছু করে দেখানোর সুযোগ ছিল। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন-পরবর্তী সমীক্ষার ফলের প্রতিফলন যদি ১৯ মে-র আসল ফলে ঘটে তবে তা নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ জুটিকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দিতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement