ছবি পিটিআই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে হাতিয়ার করে ফের গোটা দেশে এনআরসি করার দাবি তুলল বিজেপি।
দলের বক্তব্য, সঙ্কটের দিনে দেশের দরিদ্র মানুষ ত্রাণের আওতার বাইরে থাকছে। সম্পূর্ণ নাগরিক তালিকা থাকলে এই সমস্যা হত না। সবাই ত্রাণ পেত। এ ছাড়া করোনা রোখার প্রশ্নে কেন্দ্রের কাছে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল নিজামুদ্দিনের তবলিগি জামাতের সমাবেশে যোগ দেওয়াদের খুঁজে বার করা। কারণ গা ঢাকা দিয়েছেন বেশ কিছু লোক। বিজেপির দাবি, এনআরসি-র মতো তথ্যভাণ্ডার হাতে থাকলে তাদের খুঁজে বার করাটা সমস্যা হতো না। এখানেই না থেমে দিল্লিতে শাহিনবাগ-জামিয়ার বিক্ষোভ, উত্তর-পূর্ব দিল্লির সংঘর্ষ ও শেষে নিজামুদ্দিনের ঘটনার সঙ্গে যোগসূত্র জুড়ে বিজেপির দাবি, মুসলিম মৌলবাদের আখড়া হয়ে উঠেছে দেশের রাজধানী। এর জন্য দায়ী দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর তোষণনীতির কারণেই মৌলবাদীদের এই বাড়বাড়ন্ত।
কেন্দ্রের পক্ষে রাজ্যগুলিকে তবলিগি জামাতে উপস্থিত ব্যক্তিদের খুঁজে বার করার নির্দেশ দেওয়া হলেও, স্বরাষ্ট্র সূত্রের মতে, প্রায় দেড়শো জনের খোঁজ নেই। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের কথায়, নাগরিকদের একটি সার্বিক তথ্যভাণ্ডার থাকলেই আর কাউকে খুঁজে বার করতে সমস্যা হতো না। যাতে তা না-করা যায় সে জন্যই কয়েক মাস ধরে এত আন্দোলন।
ডিসেম্বর মাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সরকার সংসদে পাশ করানোর পর প্রতিবাদে পথে নামে মুসলিমদের একাংশ। তাদের অভিযোগ, মুসলিম সমাজকে নিশানা করতেই ওই আইন আনা হচ্ছে।
যদিও শুরু থেকেই সরকারের যুক্তি ছিল, সরকারি সুবিধার লাভ সত্যিকারের অভাবি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই ওই পদক্ষেপ। করোনা সংক্রমণের আবহে যখন গোটা দেশে লকডাউন, প্রান্তিক শ্রেণির মানুষ যখন নিত্যদিনের খাবার জোগাড়ে হিমশিম খাচ্ছেন, তখন এনআরসি-র মতো তথ্যভাণ্ডার থাকলে মানুষের সুবিধা হত বলে দাবি অমিতের। তাঁর বক্তব্য, সরকারের চেষ্টা সত্ত্বেও বহু মানুষ সরকারি ত্রাণের পরিধির বাইরে রয়ে গিয়েছে।
ডিসেম্বর থেকেই অশান্ত ছিল দিল্লির একাংশ। সংসদে সিএএ পাশ হওয়ার পরেই ধর্নায় বসেন শাহিনবাগের মহিলারা। প্রতিবাদের সাক্ষী থেকেছে জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরও। গত মাসেই উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হয়ে গিয়েছে রক্তক্ষয়ী গোষ্ঠী সংঘর্ষ। সব কিছুর জন্য মুসলিম মৌলবাদীদের দায়ী করে এদের বাড়বাড়ন্তের জন্য কেজরী সরকারকেই দুষেছেন মালব্য। দিল্লি সরকার তবলিগ নেতাদের সঙ্গে পুলিশের বৈঠকের ভিডিয়ো প্রকাশ করে দেখাতে চেয়েছে, সমাবেশ করতে তারা নিষেধই করেছিল। গোপনে তা করা হয়েছে। বিজেপির এই রাজনীতির সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনীতি শিকেয় তুলে একজোট হয়ে করোনা-বিপদের মোকাবিলা করা উচিত। তবলিগদের সমাবেশ যেমন উচিত হয়নি, তেমনই লকডাউন ঘোষণার পরে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সদলবলে রামের মূর্তি স্থাপনও অনুচিত ছিল।