ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমালোচক দিল্লিবাসী কাশ্মীরি সাংবাদিক ও সমাজকর্মীরা ছাড়াও কাশ্মীরের ২৫ জন বাসিন্দার ফোনে পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হয়ে থাকতে পারে। অন্তত তেমনটাই দাবি পেগাসাসের ফাঁস হওয়া তথ্যভান্ডার নিয়ে তদন্তকারী সংবাদমাধ্যমগুলির।
ওই সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, সেই তথ্যভান্ডারে প্রথম সারির বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা, রাজনীতিক, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের নম্বর রয়েছে।
এঁদের মধ্যে কেবল বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা বিলাল লোন ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রয়াত এসএআর গিলানির ফোনে ডিজিটাল ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংবাদমাধ্যম জোটের সদস্য ‘দ্য ওয়্যার’। তাদের দাবি, লোনের হ্যান্ডসেট বদলালেও ফোনে পেগাসাস হানার চিহ্ন মিলেছে। ২০১৯ সালে ওই ফোনকে নিশানা করে থাকতে পারে ইজ়রায়েলি সংস্থা এনএসও-র উপভোক্তা কোনও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপের আগে ‘পিপলস ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুভমেন্ট’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করে কাজ শুরু করেছিলেন বিলাল। তাঁর ভাই সাজ্জাদ ‘পিপলস কনফারেন্স’ নামে অন্য একটি সংগঠনের নেতা। ‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি, যখন বিলালের ফোনে নজরদারি চালানো হয়েছিল তখনও তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। বিলালের বক্তব্য, ‘‘আমি আপাতত রাজনীতি থেকে সরে এসে বেকারির ব্যবসায়ে মন দিয়েছি। ফোনে নজরদারির কথা শুনতাম। তবে আমাকে নিশানা করা হতে পারে তা ভাবিনি। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার ক্ষমতা আমার নেই।’’
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গিলানি সংসদে জঙ্গি হামলায় গ্রেফতার হন। পরে তাঁকে মুক্তি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তাঁর ফোনে পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারি হয়েছিল।
ফাঁস হওয়া তথ্যভান্ডারে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির পরিবারের সদস্য, হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ় উমর ফারুক, হুরিয়ত নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির জামাই ইফতিকার গিলানি ও তাঁর ছেলে সৈয়দ নাসিম গিলানির নম্বর। মেহবুবা এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে তাঁর কথায়, ‘‘নজরদারিতে কাশ্মীরিরা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন।’’ নাসিম গিলানির বক্তব্য, ‘‘আমার উপরে নজরদারি চালানো হয়ে থাকতে পারে।’’
‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি, মিরওয়াইজ়ের গাড়িচালকের নম্বরও রয়েছে ওই তথ্যভান্ডারে। মিরওয়াইজ়ের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী জানিয়েছেন, যে ভাবে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে তাতে তিনি উদ্বিগ্ন। ‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি, তথ্যভান্ডারে রয়েছে সমাজকর্মী ওয়াকার ভাট্টি, সাংবাদিক মুজ়াম্মে্ল জলিল, আওরঙ্গজেব নাক্সবন্দি ও সুমীর কলের নম্বরও। দিল্লি ও উপত্যকার দু’জন ব্যবসায়ীর উপরেও নজরদারি চালানো হয়ে থাকতে পারে। রয়েছে মিরওয়াইজ ঘনিষ্ঠ এক ধর্মগুরুর নম্বরও।