অভিযুক্ত যুবক গৌরব। ছবি: সংগৃহীত।
চারতলা থেকে এক তরুণী নীচে আছড়ে পড়েছিলেন। তাঁর পড়ার আওয়াজ পেতেই আশপাশের লোকেরা ছুটে আসেন। সেই ভিড়ের মধ্যে থেকেই এক যুবক হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। তার পর তরুণীর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে দা়ড়িয়ে থাকা লোকজনের উদ্দেশে বলেছিলেন, “ও আমার বোন।” তার পর তরুণীর দেহ নিয়ে সেখান থেকে চম্পট দেন।
প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তরুণীকে চার তলা থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, নিজেকে তরুণীর দাদা হিসাবে পরিচয় দিয়ে সেখান থেকে দেহ নিয়ে চম্পট দেন ‘প্রেমিক’। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সেক্টর ৪৯-এ।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম গৌরব। মৃতার নাম শীতল (২২)। তিনি হোসিয়ারপুরে একটি বিমা সংস্থায় কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার হোসিয়ারপুরে যান গৌরব। তরুণীকে তাঁর প্রেমপ্রস্তাব স্বীকার করার জন্য জোরাজুরি করেন। কিন্তু শীতল সেই প্রস্তাব স্বীকার না করায় গৌরব তাঁকে চার তলা থেকে ঠেলে ফেলে দেন বলে অভিযোগ।
শীতলের পরিবারের অভিযোগ, অনেক দিন ধরে তাঁদের মেয়েকে উত্ত্যক্ত করছিলেন গৌরব। তাঁকে নিষেধ করেও কোনও লাভ হয়নি। রাস্তায়, কাজের জায়গায় গিয়ে প্রেমপ্রস্তাব স্বীকার করার জন্য চাপ দিতেন। বিষয়টি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পৌঁছলে পুলিশের কাছে গৌরবের নামে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন শীতলের পরিবার।
তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে গৌরবকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। কিন্তু শীতলকে ‘আর উত্ত্যক্ত করবে না’ এই মুচলেকা দেওয়ার পর গৌরবকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু সেই মুচলেকাতেও কাজ হয়নি। অভিযোগ, তার পরেও শীতলকে বিরক্ত করতেন গৌরব।
চার তলা থেকে তরুণীর পড়ে যাওয়ার ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ হোসিয়ারপুরে আসে। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের জানান, তরুণীর দাদা তাঁর দেহ তুলে নিয়ে গিয়েছে। শীতলের পরিবার গৌরবের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তার পরই গৌরবের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান চিহ্নিত করে তাঁর পিছু নেয়। মেরঠ থেকে শীতলের দেহসমেত গৌরবকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জেরায় পুলিশের কাছে গৌরব দাবি করেছেন, বিজনৌরে শীতলকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তিনি আরও দাবি করেন, শীতল তাঁকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তার পর থেকেই এড়িয়ে যাওয়া শুরু করেন। গৌরব সত্যি কথা বলছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।