উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে এখনও চলছে উদ্ধারকাজ। — ফাইল চিত্র।
১৬০ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। এখনও উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন ৪১ জন কর্মী। ক্রমেই উদ্ধারের বিষয়ে আশা হারাচ্ছেন আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবার। এই নিয়ে আঙুল উঠছে প্রশাসনের দিকে। এর মধ্যেই সুড়ঙ্গ তৈরিতে একটি গাফিলতি প্রকাশ্যে এল। নিয়ম মেনে তিন কিলোমিটার বা তার বেশি দৈর্ঘ্যের সুড়ঙ্গে একটি বিশেষ নির্গমন পথ (এসকেপ রুট) থাকার কথা। ধস, দুর্ঘটনার সময় যাতে ওই পথ ধরে আটকে পড়া মানুষজন বেরিয়ে আসতে পারেন। সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ তৈরির আগেও সে রকম ‘এসকেপ রুট’-এর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর করা হয়নি। সুড়ঙ্গের মানচিত্র থেকে তা স্পষ্ট।
এই ‘এসকেপ রুট’ না থাকার কারণেই উত্তরাখণ্ডে বিঘ্নিত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। বিকল্প পথে আটকদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। শ্রমিকদের পরিবারের অভিযোগ, ওই ‘এসকেপ রুট’ সুড়ঙ্গে তৈরি করা হলে এত দিন ধরে আটকে থাকতে হত না শ্রমিকদের। এত দিন সুড়ঙ্গের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মাটি খুঁড়ে পাইপ ঢোকানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। ওই পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যা বেলা বিকট একটা শব্দের পর ড্রিল যন্ত্র বন্ধ করা হয়েছে। নতুন করে ধস নামার কারণে বিশ বাঁও জলে পড়েছে উদ্ধার কাজ। আটক ৪১ জনের মধ্যে বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার সুড়ঙ্গের সামনে গিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভিকে সিংহ। তখনই দেখানো হয়েছিল সুড়ঙ্গের মানচিত্র। তার পরেই প্রকাশ্যে আসে এই গাফিলতির কথা যে, আদতে সুড়ঙ্গে কোনও ‘এসকেপ রুট’ রাখাই হয়নি। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন এবং জাতীয় সড়ক মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সিংহকে জানানো হয়েছিল, দু’-তিন দিনের মধ্যে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হবে। দু’দিন কেটে গেলেও উদ্ধার কাজ শেষ হয়নি।
ছ’দিন পেরিয়ে সাত দিনে পা দিল উত্তরকাশীর উদ্ধারকাজ। টানা সাত দিন ধরে সুড়ঙ্গে আটকে আছেন ৪০ জন শ্রমিক। পাইপের মাধ্যমেই তাঁদের কাছে খাবার ও অন্যান্য দরকারি জিনিস পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মাটি খোঁড়ার জন্য দিল্লি থেকে অত্যাধুনিক খননযন্ত্র আনানো হয়েছিল। সেই যন্ত্রে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। অন্য একটি বিদেশি যন্ত্রের মাধ্যমে কাজ চলছিল। ইনদওর থেকে আরও একটি বিশেষ যন্ত্র আনানো হচ্ছে বলে খবর। সেই যন্ত্র এসে পৌঁছলে আবার মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হবে। সুড়ঙ্গের ৬০ মিটার দীর্ঘ ধ্বংসস্তূপের পিছনে আটকে আছেন শ্রমিকেরা। এখনও পর্যন্ত খোঁড়া গিয়েছে মাত্র ২৪ মিটার।