পুলিশের সামনেই গুলি করে খুন করা হয় আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফ। ফাইল চিত্র।
আতিক আহমেদ এবং তাঁর ভাই আশরফকে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা হলেন, উত্তরপ্রদেশের হামিরপুরের বাসিন্দা সানি, কাসগঞ্জের বাসিন্দা অরুণ এবং বান্দার বাসিন্দা লবলেশ। আতিক এবং আশরফকে খুনের পরই তাঁরা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে খুন, অপহরণ এবং ডাকাতি-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের এক সূত্রের দাবি, জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছেন যে, জেলে থাকাকালীন তিন জন পরস্পরের বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন। সেই থেকেই একসঙ্গে যাবতীয় অপরাধ করতেন। অভিযুক্তরা পুলিশের কাছে এ-ও দাবি করেছেন যে, উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে বড় ‘ডন’ হওয়ার লক্ষ্য ছিল তাঁদের। ছোটখাটো অপরাধ করে কারও নজরে আসতে পারছিলেন না। তাই বড় ধরনের এমন কোনও অপরাধ করতে চাইছিলেন যাতে ‘বিখ্যাত’ হয়ে ওঠেন।
পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, জেরায় অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন জানিয়েছেন, অনেক দিন ধরেই সেই সুযোগ খুঁজছিলেন তাঁরা। সম্প্রতি তাঁরা জানতে পেরেছিলেন ‘গ্যাংস্টার’ আতিক এবং তার ভাই আশরফকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন তাঁরা পরিকল্পনা করেন যে, যদি এই সুযোগে আতিক এবং তার ভাইকে খুন করা যায়, তা হলে উত্তরপ্রদেশে তাঁদের নাম ছড়িয়ে পড়বে। শুধু তাই-ই নয়, এত দিন ধরে যাঁরা আতিক এবং তার গ্যাংকে ভয় পেতেন, এখন থেকে তাঁদের ভয়ে কাঁপবেন সেই সব মানুষ।
পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, আতিককে খুনের পরিকল্পনা করার পরই শুক্রবার হাসপাতালের রেকি করে গিয়েছিলেন তিন অভিযুক্ত। শনিবার আতিক এবং আশরফকে যখন নিরাপত্তার ঘেরাটোপে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। শারীরিক পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছিলেন আতিক। সেই সময়ই সাংবাদিক সেজে আসা তিন দুষ্কৃতী প্রথমে আতিককে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করেন মাথায়। তার পর আশরফকেও গুলি করে মারা হয়। দু’জনে মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পরেও হামলাকীরার পর পর গুলি চালাতে থাকেন পুলিশের সামনেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের মধ্যে সানি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হামিরপুর থেকে প্রয়াগরাজে এসেছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়েন। ইতিমধ্যেই তিন অভিযুক্তের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়েছে পুলিশ। তাঁদের জেরা করা হচ্ছে। কয়েক জনকে নিজেদের হেফাজতেও নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।