ফাইল চিত্র।
বিপুল আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ইতিমধ্যেই উঠেছে ঝাড়খণ্ডের খনিসচিব পূজা সিঙ্ঘলের বিরুদ্ধে। এ বার রাঁচীর পিএমএলএ আদালতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অভিযোগ করেছে, একাধিক জেলায় জেলাশাসকের পদে থাকাকালীন পূজা এবং তাঁর স্বামী অভিষেক ঝায়ের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে প্রায় ১ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা জমা হয়েছিল। পূজার বেতন বাদেই এই টাকা ঢুকেছিল।
এমনকি এই আইএএস অফিসার তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১৬ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা অন্যান্য অ্যাকাউন্টে সরিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে ইডি। তাদের অভিযোগ, ওই অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ন্ত্রণ করতেন পূজার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) সুমন কুমার।
এমএনরেগা প্রকল্পের টাকা নয়ছয় সংক্রান্ত এই মামলায় সুমনকে গত ৬ তারিখে গ্রেফতার করেছে ইডি। বিভিন্ন শহরে তল্লাশিও চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। সুমনের বাড়ি এবং অফিস থেকে ইডি প্রায় ১৭ কোটি ৭৯ লক্ষ নগদ টাকা উদ্ধার করেছে। মেশিন ব্যবহার করে সেই টাকা গোনার ছবি ও ভিডিয়ো দিন কয়েক আগেই ভাইরাল হয়েছিল। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া টাকার অঙ্ক প্রায় ১৯ কোটি ৩১ লক্ষ। খুঁটি জেলায় এমএনরেগা প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২০ সালে ঝাড়খণ্ড সরকারের প্রাক্তন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার রামবিনোদ প্রসাদ সিন্হার গ্রেফতারি দিয়ে মামলাটির শুরু। পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হওয়ার পরে সিন্হা ইডি-র কাছে দাবি করেন, নয়ছয় হওয়া টাকার পাঁচ শতাংশ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে কমিশন হিসেবে দিতে হয়েছিল তাঁকে। ওই সময়ে (২০০৯-২০১০) খুঁটির ডেপুটি কমিশনার ছিলেন পূজা।
ইডি আদালতে জানিয়েছে, ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত চাতরা, খুঁটি এবং পলামুর ডেপুটি কমিশনার তথা জেলাশাসক ছিলেন পূজা। সেই সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আনানো হয়েছে পূজা এবং তাঁর স্বামীর অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট। তাতে দেখা যাচ্ছে, ওই সময়ে তাঁদের অ্যাকাউন্টে আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রায় ১ কোটি ৪৩ লক্ষ নগদ টাকা জমা পড়েছিল। ২০০৫-২০০৬ এবং ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের মধ্যে পূজা ১৩টি পলিসি কেনেন এবং ৮০ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা প্রিমিয়াম দেন। আবার নির্ধারিত সময়ে আগেই সেই পলিসিগুলি বন্ধ করে দিয়ে ‘ক্লোজ়ার ভ্যালু’ হিসেবে তিনি ৮৪ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা পান। ইডি-র দাবি, ২০১৫ সালে সেই টাকা থেকে ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা তাঁর সিএ সুমনের অ্যাকাউন্টে পাঠান পূজা। এর পাশাপাশি আরও দু’টি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে ৬ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা (২০১৬ সালে) এবং ৬ লক্ষ ২২ হাজার টাকা (২০১৭ সালে) পাঠানো হয়। সেগুলি সুমনই নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ ছাড়া, রাঁচীর একটি মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতালের সঙ্গে পূজার ব্যবসায়ী স্বামীর যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। সেটির ব্যবসায়িক লেনদেনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বয়ান রেকর্ড করতে পূজাকেও তলব করতে পারে ইডি।