মুজফ্ফরপুরের হাসপাতালে সন্তানহারা। রবিবার। পিটিআই
হাসপাতালে সপার্ষদ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। তার মধ্যেই অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম (এইএস) বা ‘চমকি বুখার’-এ মৃত্যু হল এক শিশুর। ইতিমধ্যেই বিহারে এই রোগে মৃতের সংখ্যা ৮৫-তে পৌঁছেছে। বেসরকারি মতে সংখ্যাটা শতাধিক। হাসপাতালের কান্নার রোল উঠছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আরও বেশি ওষুধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম দাবি করছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দফতরের আধিকারিকদের জরুরি ভিত্তিতে সেই দাবি মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। নিজে এক জন চিকিৎসক হিসেবে হর্ষ বর্ধনের অভিমত, কোনও ভাইরাসের জন্য এই জ্বর হয়নি। তবে অত্যধিক গরম অথবা খালি পেটে লিচু খাওয়ার জন্য হয়ে থাকতে পারে। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
চিকিৎসকদের একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন আজ দিল্লি থেকে মুজফ্ফরপুরে পৌঁছন। তিনি এসকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পাণ্ডে। পরিদর্শনের সময়েই রাজেপুর এলাকার পাঁচ বছরের শিশু নিশা মারা যায়। সন্তানহারা মা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করেন মন্ত্রীদের সামনেই। আইসিইউতেই পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে। মন্ত্রীরা হাসাপাতালে থাকার সময়ে আরও এক শিশু মুন্নি কুমারীর মৃত্যু হয়। পাঁচ বছরের মুন্নি কাদরিয়ার বাসিন্দা। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার প্রত্যেক মৃতের আত্মীয়কে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে চার লক্ষ টাকা সাহায্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত কয়েক বছর ধরেই এইএসের জেরে শিশুমৃত্যু লেগে রয়েছে বিহারে। গত বছর কম হলেও ২০১৪ সালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল এতে। এ দিন হাসপাতাল পরিদর্শনের পরে সংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হর্ষ বর্ধন। বিহারে প্রতি বছর বিভিন্ন জ্বরে বেশ কিছু শিশুর মৃত্যু হয়। সে কথা মাথায় রেখে বিহারে এইএস নিয়ে গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এক বছরের মধ্যেই তা তৈরি হবে বলে জানান তিনি। মুজফ্ফরপুরের আইসিইউয়ের পরিষেবা নিয়েও খুশি নন হর্ষবর্ধন। সেখানে ১০০ শয্যার আইসিইউ এবং বিহারের পাঁচ জেলায় বায়োলজি ল্যাব তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
হর্ষ বর্ধন বলেন, “আমি চার ঘণ্টা হাসপাতালে ছিলাম। একশোর বেশি শিশুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এক জন চিকিৎসক হিসেবে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছি। সমস্ত রোগীর শরীরে একই লক্ষণ রয়েছে। সময় মতো হাসপাতালে পৌঁছলে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে।” হাসপাতালের চিকিৎসকদের কাজের প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর মতে, “এই ঘটনার দায় কারও কাঁধে চাপানোর নয়। সকলে একসঙ্গে মিলে কাজ করেছেন।”