অনন্ত কুমার হেগড়ের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে আক্রমণ রাহুল গাঁধীর। —ফাইল চিত্র
কখনও ‘হিন্দু মেয়ে’ নিয়ে, কখনও ‘মুসলিম মহিলা’— পর পর ‘সাম্প্রদায়িক’ মন্তব্য করে চলা বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ে রীতিমতো তোপের মুখে পড়েছেন টুইটারে। এ বার তাঁকে ‘ভারতবাসীর লজ্জা’ বলে আক্রমণ করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। হেগড়ে ‘মন্ত্রী হওয়ার অযোগ্য’ বলেও মন্তব্য করেছেন রাহুল।
বিতর্ক শুরু হয় রবিবার। নিজের রাজ্য কর্নাটকের কোদাউগু জেলার এক গ্রামে, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের একটি অনুষ্ঠানে অনন্ত কুমার বলেন, ‘‘কোনও হিন্দু মেয়েকে ছুঁলে তাঁর হাত কেটে নেওয়া হবে।’’ মন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে এই ধরনের মন্তব্য করা কতটা শোভনীয়, সেই প্রশ্ন তোলেন নেটিজেনরা। মন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে আছড়ে পড়তে থাকে কমেন্ট, পোস্ট।
এ সবের মধ্যেই, কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও টুইট করে প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে কর্নাটকের উন্নয়নে কী করেছেন হেগড়ে’! এর পরই দুই শিবিরের দুই নেতা টুইট-যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। এই টুইট বিতণ্ডায় গুন্ডু রাওয়ের স্ত্রীর ধর্ম নিয়েও মন্তব্য করে বসেন হেগড়ে। “উনি তো একজন মুসলিম মহিলার পিছনে ছুটে বেড়ান”— গুন্ডু রাওকে উদ্দেশ্য করে বলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ‘হিন্দু মেয়ে’ থেকে ‘মুসলিম মেয়ে’! কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পরপর বিতর্কিত মন্তব্যে টুইটার তোলপাড়
মুখ খোলেন গুন্ডু রাওয়ের স্ত্রী তাবু-ও। লম্বা একটি টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘আমি তো কখনও কোনও বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মন্তব্য করিনি। তাঁদের সস্তা রাজনীতিতে আমার নাম দাবার ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার হোক, এটা আমি চাই না।” এই ধরনের উস্কানিমূলক এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন মন্তব্য একজন মন্ত্রীর পক্ষে অশোভনীয়— এও লিখেছেন তাবু রাও।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
এর পর সরব হন রাহুল গাঁধীও। টুইটারে তাঁর তোপ, ‘‘এই লোকটা (অনন্ত কুমার হেগড়ে) প্রতিটা ভারতবাসীর লজ্জা। মন্ত্রী হওয়ার অযোগ্য। তাঁকে বরখাস্ত করা উচিত।’’
আরও পডু়ন: কংগ্রেসের ‘গরিবি হঠাও’, ক্ষমতায় এলে গরিবদের ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা, ঘোষণা রাহুলের
হেগড়ের ‘কুকথা’ অবশ্য এই প্রথম নয়। গত বছরই কর্নাটকে এক জনসভায় যেমন তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষ এবং প্রগতিশীল বলে দাবি করেন, তাঁদের মা-বাবার ঠিক নেই।’’ এই মন্তব্যের জেরে লোকসভায় ক্ষমাও চাইতে হয় তাঁকে। এ বারের বিতর্কে অবশ্য, এখনও পর্যন্ত বিজেপির তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।