ফাইল চিত্র।
দু’বছর পরেই লোকসভা নির্বাচন। চূড়ান্ত লড়াইয়ের আগে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনই হতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর সেমিফাইনাল। তাঁর দ্বিতীয় দফার সরকার ও বিজেপির প্রতি মানুষের সমর্থন কোন পর্যায়ে, তার আঁচ মিলবে পাঁচ রাজ্যের ১৮ কোটি ভোটারের ভোটে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুর— চার রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রাখার কঠিন লড়াইয়ে নামতে চলেছে বিজেপি। তাদের সামনে অঙ্কটা কঠিন কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাবেও।
পাঁচ বছর আগে উত্তরপ্রদেশ দখল ছিল মোদীদের প্রধান লক্ষ্য। এখন লখনউয়ের মসনদ ধরে রাখাই প্রধান চ্যালেঞ্জ বিজেপির। কৃষি আইন ঘিরে কৃষক সমাজের বিক্ষোভ, লখিমপুর খেরি কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অজয় মিশ্র টেনির কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় থেকে যাওয়া— উত্তরপ্রদেশের সাধারণ মানুষ যে ভাল ভাবে নেননি, সেই দেওয়াল লিখন পড়তে পারছে বিজেপি। হিন্দি বলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্যের রাশ হাত থেকে চলে গেলে, ২০২৪-এ কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফেরা কঠিন হবে বুঝেই উত্তরপ্রদেশ দখলে সর্বশক্তি সঁপে দিয়েছেন মোদী। গত এক-দেড় মাস ধরে দফায় দফায় বারাণসী-সহ উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন শহরে সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাসে ছুটে বেড়িয়েছেন।
চিন্তা জাতপাতের রাজনীতিও। যোগী সরকারের শাসনে ঠাকুর শ্রেণির বাড়বাড়ন্ত ভাল ভাবে নেয়নি উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ-দলিত ও পিছিয়ে পড়া সমাজের একাংশ। পাঁচ বছর আগের শরিক, দলিত নেতা ওমপ্রকাশ রাজভড় এ বার অখিলেশের সিংহ যাদবের সঙ্গী। মনে করা হচ্ছে, এসপির পাশে থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিতে এককাট্টা যাদব ও মুসলিমেরা। অন্য দিকে, বিক্ষুব্ধ ব্রাহ্মণ সমাজ ফের ইঙ্গিত দিয়েছে মায়াবতীর সঙ্গে হাত মেলানোর। ফলে উত্তরপ্রদেশে ভোটের অঙ্ক মেলাতে গিয়ে বেজায় মুশকিলে বিজেপি। ভরসা একমাত্র হিন্দুত্বের জিগির। ব্যক্তিগত ভাবে লড়াইটা যোগী আদিত্যনাথেরও। এ যাত্রায় হারলে মোদীর পরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে যাবেন। যোগীর সমস্যা হল, তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে হতে যাওয়া নির্বাচন উস্কে দিয়েছে তাঁর সরকারের দ্বিতীয় কোভিড ঢেউ সামলাতে ব্যর্থ হওয়ার প্রসঙ্গ। বেকারত্ব, মানুষের খেতে না পাওয়া, লাশ ভেসে যাওয়ার স্মৃতি উস্কে প্রচারে নেমেছেন বিরোধীরা।
বিজেপির ক্ষমতা ধরে লড়াই গোয়া, মণিপুর ও উত্তরাখণ্ডে। তুলনায় ছোট রাজ্য তিনটেই। গোয়ায় আপাত ভাবে স্বস্তিছে বিজেপি। কংগ্রেসের পাশাপাশি আপ ও তৃণমূল কংগ্রেস ভোট ময়দানে নামায় বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা। তাতে সুবিধা হবে বিজেপির। তবে গোয়ায় খ্রিস্টান ভোটারদের একাংশ বিজেপিকে দীর্ঘদিন সমর্থন করে এলেও মিশনারিজ় অব চ্যারিটির বিদেশি অনুদান পাওয়ার পথ রুদ্ধ হওয়ায় বিরূপ বার্তা গিয়েছে তাঁদের কাছে। যা প্রচারেও এনেছে তৃণমূল। আজ তাই ভোট ঘোষণার আগে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্র। তৃণমূলের দাবি, খ্রিস্টান ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত।
মণিপুরে ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে বিজেপি নিশ্চিত হলেও সম্প্রতি নাগাল্যান্ডে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে গ্রামবাসীদের মৃত্যু ও গোটা উত্তর-পূর্ব জুড়ে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি ওঠায় কিছুটা অস্বস্তিতে শাসক শিবির। ওই রাজ্যে তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধিও চিন্তায় রাখছে বিজেপিকে।
উত্তরাখণ্ড গত বছরে তিন বার মুখ্যমন্ত্রী বদলের সাক্ষী থেকেছে। রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে দলাদলি, প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া, সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীদের পরাজয়— রীতিমতো অস্বস্তিতে রেখেছে বিজেপিকে। সূত্রের মতে, রাজ্যের প্রায় অর্ধেক বিধায়ক টিকট পাবেন না এ বার। তাতে বিক্ষুব্ধ প্রার্থী বাড়তে পারে ময়দানে। আজ ভোট ঘোষণা হতেই মাঠে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাউত। সূত্রের মতে, ইতিমধ্যেই বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কংগ্রেস। হরিশের দাবি, ‘‘উত্তরাখণ্ড থেকেই বিজেপির শেষের শুরু হতে চলেছে।’’
পঞ্জাবে অমরিন্দর সিংহকে সরিয়ে চরণজিৎ চন্নীর মতো দলিতকে মুখ্যমন্ত্রী করার ঝুঁকি নিয়েছে কংগ্রেস। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া কমিয়ে যা তাদের সুফল দিতে পারে বলে ধারণা কংগ্রেসের। এ দিকে বিজেপি কাছে টেনেছে অমরিন্দরকে। তাদের মূল নজর পঞ্জাবের ৪০ শতাংশ হিন্দু ভোটের দিকে। আপ ও কংগ্রেসের কারণে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার আশা করছে বিজেপি। কিন্তু তাদের আসল চিন্তা কৃষক সমাজ। ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে পড়ায় স্পষ্ট বার্তা মিলেছে, তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করেও পঞ্জাবের মন পাননি মোদী। রাজ্যের কৃষকদের বড় অংশ এখনও বিজেপির থেকে মুখ ঘুরিয়ে রয়েছে। ফলে মোদীর লড়াইটা কঠিন পঞ্জাবেও।
এককাট্টা যাদব ও মুসলিমেরা। অন্য দিকে, বিক্ষুব্ধ ব্রাহ্মণ সমাজ ফের ইঙ্গিত দিয়েছে মায়াবতীর সঙ্গে হাত মেলানোর। ফলে উত্তরপ্রদেশে ভোটের অঙ্ক মেলাতে গিয়ে বেজায় মুশকিলে বিজেপি। ভরসা একমাত্র হিন্দুত্বের জিগির। ব্যক্তিগত ভাবে লড়াইটা যোগী আদিত্যনাথেরও। এ যাত্রায় হারলে মোদীর পরে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে যাবেন। যোগীর সমস্যা হল, তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে হতে যাওয়া নির্বাচন উস্কে দিয়েছে তাঁর সরকারের দ্বিতীয় কোভিড ঢেউ সামলাতে ব্যর্থ হওয়ার প্রসঙ্গ। বেকারত্ব, মানুষের খেতে না পাওয়া, লাশ ভেসে যাওয়ার স্মৃতি উস্কে প্রচারে নেমেছেন বিরোধীরা।
বিজেপির ক্ষমতা ধরে লড়াই গোয়া, মণিপুর ও উত্তরাখণ্ডে। তুলনায় ছোট রাজ্য তিনটেই। গোয়ায় আপাত ভাবে স্বস্তিছে বিজেপি। কংগ্রেসের পাশাপাশি আপ ও তৃণমূল কংগ্রেস ভোট ময়দানে নামায় বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা। তাতে সুবিধা হবে বিজেপির। তবে গোয়ায় খ্রিস্টান ভোটারদের একাংশ বিজেপিকে দীর্ঘদিন সমর্থন করে এলেও মিশনারিজ় অব চ্যারিটির বিদেশি অনুদান পাওয়ার পথ রুদ্ধ হওয়ায় বিরূপ বার্তা গিয়েছে তাঁদের কাছে। যা প্রচারেও এনেছে তৃণমূল। আজ তাই ভোট ঘোষণার আগে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে কেন্দ্র। তৃণমূলের দাবি, খ্রিস্টান ভোটব্যাঙ্কের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত।
মণিপুরে ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে বিজেপি নিশ্চিত হলেও সম্প্রতি নাগাল্যান্ডে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে গ্রামবাসীদের মৃত্যু ও গোটা উত্তর-পূর্ব জুড়ে আফস্পা প্রত্যাহারের দাবি ওঠায় কিছুটা অস্বস্তিতে শাসক শিবির। ওই রাজ্যে তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধিও চিন্তায় রাখছে বিজেপিকে।
উত্তরাখণ্ড গত বছরে তিন বার মুখ্যমন্ত্রী বদলের সাক্ষী থেকেছে। রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে দলাদলি, প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া, সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীদের পরাজয়— রীতিমতো অস্বস্তিতে রেখেছে বিজেপিকে। সূত্রের মতে, রাজ্যের প্রায় অর্ধেক বিধায়ক টিকট পাবেন না এ বার। তাতে বিক্ষুব্ধ প্রার্থী বাড়তে পারে ময়দানে। আজ ভোট ঘোষণা হতেই মাঠে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাউত। সূত্রের মতে, ইতিমধ্যেই বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে কংগ্রেস। হরিশের দাবি, ‘‘উত্তরাখণ্ড থেকেই বিজেপির শেষের শুরু হতে চলেছে।’’
পঞ্জাবে অমরিন্দর সিংহকে সরিয়ে চরণজিৎ চন্নীর মতো দলিতকে মুখ্যমন্ত্রী করার ঝুঁকি নিয়েছে কংগ্রেস। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া কমিয়ে যা তাদের সুফল দিতে পারে বলে ধারণা কংগ্রেসের। এ দিকে বিজেপি কাছে টেনেছে অমরিন্দরকে। তাদের মূল নজর পঞ্জাবের ৪০ শতাংশ হিন্দু ভোটের দিকে। আপ ও কংগ্রেসের কারণে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হওয়ার আশা করছে বিজেপি। কিন্তু তাদের আসল চিন্তা কৃষক সমাজ। ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে পড়ায় স্পষ্ট বার্তা মিলেছে, তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করেও পঞ্জাবের মন পাননি মোদী। রাজ্যের কৃষকদের বড় অংশ এখনও বিজেপির থেকে মুখ ঘুরিয়ে রয়েছে। ফলে মোদীর লড়াইটা কঠিন পঞ্জাবেও।