ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা নির্বাচন (২০২৪) থেকেই ‘রিমোট ভোটিং’ চালু করতে চায় নির্বাচন কমিশন। দাবি, দেশের সমস্ত মানুষকে ভোটদানের সুযোগ করে দিতেই রিমোট ভোটিং বা ই-পোস্টাল ব্যালট চালুর এই ভাবনা। এ নিয়ে কমিশনের চূড়ান্ত রূপরেখা এখনও সামনে আসেনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা শুরু হতেই তাতে প্রবল আপত্তি জানাল তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি।
বিরোধীদের বক্তব্য, যেখানে কারচুপির সম্ভাবনা রুখতে ইভিএম তুলে দিয়ে ব্যালট পেপারে ফিরে যাওয়ার দাবি তোলা হচ্ছে, সেখানে রিমোট ভোটিংয়ের প্রশ্নই নেই।
কমিশনের মতে, পরিযায়ী শ্রমিক, পড়ুয়া, কাজের সূত্রে ভিন্ রাজ্যে যাওয়া অনেকেই দূরত্বের কারণে ভোটের সময়ে নিজের জায়গায় গিয়ে ভোট দিতে পারেন না। সেই কারণেই রিমোট ভোটিংয়ের ভাবনা। এ ক্ষেত্রে বর্তমানে সরকারি কর্মীদের জন্য জারি হওয়া পোস্টাল ব্যালটের মতো বাইরে থাকা ব্যক্তিদের নামে ই-ব্যালট ইস্যু করা হবে। নিজেদের কাজের জায়গায় একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে তার ভিত্তিতে নিজের কেন্দ্রের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন তাঁরা।
কিন্তু আজ সংসদীয় বৈঠকে এ নিয়ে কথা শুরু হতেই প্রতিবাদ জানান তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অধিকাংশ বিরোধী নেতা। তাঁদের মতে, ইভিএম ব্যবস্থাই এখনও নিখুঁত নয়। ফলে রিমোট ভোটিং কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তা ছাড়া, কোনও একটি বিধানসভা বা লোকসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা সারা দেশে ছড়িয়ে থাকতে পারেন। তাঁদের কী ভাবে চিহ্নিত করা হবে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই আইন মন্ত্রকের কাছে।
কমিশনের দাবি, মূলত পরিযায়ীদের ভোট দেওয়ার সুবিধা করে দিতে এই সিদ্ধান্ত। বিরোধী সাংসদদের পাল্টা প্রশ্ন, কোনও ব্যক্তি কত দিন ভিন্ রাজ্যে থাকলে তাঁকে পরিযায়ী হিসেবে গণ্য করা হবে, তা আগে স্পষ্ট হোক। কল্যাণদের যুক্তি, লকডাউনে দেখা গিয়েছে সরকারের কাছে পরিযায়ীদের তথ্য নেই। সেই তথ্যভান্ডার না গড়ে রিমোট ভোটিং পদ্ধতি শুরু করা বেশ কঠিন।
কমিশন সূত্রে খবর, এ বিষয়ে সফটওয়্যার তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে আইআইটি-চেন্নাইকে। আগামী লোকসভা ভোটেই রিমোট ভোটিং পদ্ধতি চালুর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখে এগোচ্ছে কমিশন।