ফাইল চিত্র।
মনোনয়ন আর প্রচার পর্বে বিজ্ঞাপন দিলে হবে না। সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তা শেষ করতে হবে প্রার্থী আর রাজনৈতিক দলকে। তেমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
প্রার্থীর ফৌজদারি অপরাধ, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল এবং তা জনসমক্ষে আনা নিয়ে শুক্রবার দীর্ঘ বৈঠক করেন নির্বাচন সদনের কর্তারা। তারপরেই তাঁরা জানান, প্রথম বিজ্ঞাপনটি মনোয়নন প্রত্যাহারের শেষদিনের থেকে চারদিনের মধ্যে প্রকাশ্যে আনতে হবে রাজনৈতিক দলকে। মনোয়নন প্রত্যাহারের শেষদিন থেকে পাঁচ বা আট দিনের মধ্যে দিতে হবে।
আর তৃতীয়টি নবম দিন থেকে ভোট প্রচার শেষের (ভোটের দিনের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ হয়) মধ্যে দেবে রাজনৈতিক দল। এমনকি, দলের প্রতীকে কোনও প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা জয়ী হলেও তাঁর অপরাধের তথ্যও একই নিয়মানুসারে প্রকাশ করতে বাধ্য সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল।
এই নির্দেশ পালন না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন দেশের নির্বাচন পরিচালক সংস্থা। তা দেশের নির্বাচনী গণতন্ত্রের পক্ষে সহায়ক হবে বলেই মত কমিশন কর্তাদের। এই নতুন নিয়ম আসন্ন বিহার বিধানসভা ভোট থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
একদা হলফনামাতে ফৌজদারি অপরাধের কথা জানাতেন প্রার্থীরা। ২০১৮ সালের অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কমিশন জানায়, মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণের আগে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রার্থীরা ফৌজদারি মামলার সবিস্তার তথ্য সংবাদপত্র আর টিভিতে তিনবার বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাবেন। আর প্রার্থী যদি রাজনৈতিক দলের প্রতীকে লড়েন, তবে মামলার কথা দলকেও আমজনতার সামনে নিয়ে আসতে হবে। তার সঙ্গেই চলতি বছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে আরও কিছু নির্দেশ সংযোজন করে কমিশন। সেই সময় তারা জানায়, কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ ও মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য রাজনৈতিক দলকে বাধ্যতামূলক ভাবে নিজেদের ওয়েবসাইটে দিতে হবে। পাশাপাশি, একটি স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদপত্রেও বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে এবং দলের ফেসবুক, টুইটারেও সেই সব তথ্য দিতে হবে। প্রার্থীর বাছাইয়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বা মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনের অন্তত দু'সপ্তাহ আগে এই সব তথ্য প্রকাশ করতে হবে।
প্রার্থী বাছাইয়ের ৭২ ঘন্টা আগে মধ্যে এই সব পদক্ষেপ করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। সেই সময়ে কমিশন জানিয়েছিল, কোনও অভিযোগ না থাকা ব্যক্তিকে কেন প্রার্থী করা গেল না, তা নূন্যতম ১০০ শব্দে কমিশনকে লিখে জানাতে হবে। ফৌজদারি অপরাধের মামলা থাকা ব্যক্তিকে কেন করা হল, তা-ও জানানোর নির্দেশ ছিল কমিশনের তরফে।
নির্দেশিকার মধ্যে দিয়ে নির্বাচনী গণতন্ত্র মজবুত হওয়ার কমিশনের দাবি আর বাস্তব চিত্রের মধ্যে অনেকটা ফারাক থাকা নিয়ে চর্চা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।