বিলাল
নয়ডার শারদা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন শ্রীনগরের বাসিন্দা বছর উনিশের এহতিশাম বিলাল। অক্টোবর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে আফগান পড়ুয়াদের সঙ্গে ভারতীয় পড়ুয়াদের গোলমালে মারধর করা হয় তাঁকে। ২৮ অক্টোবর নিখোঁজ হন বিলাল। নভেম্বরের গোড়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হয় কালাশনিকভ হাতে তাঁর ছবি। আইএসে যোগ দেওয়া সেই বিলালকেই আজ ঘরে ফেরানো গিয়েছে বলে দাবি জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের। এই দাবি মেনে নিয়েছে বিলালের পরিবারও। পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বিলাল।
এহতিশামের সঙ্গেই শারদা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন তাঁর সম্পর্কিত ভাই। তিনি জানিয়েছিলেন, আফগান ছাত্রদের সঙ্গে গোলমালের পরে বেশ কিছু পড়ুয়া ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। আফগানদের সঙ্গে মারধর করা হয় বিলালকেও। পরে বিলালকে হুমকিও দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
২৮ অক্টোবর নিখোঁজ হয়ে যান বিলাল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, দিল্লিতে এক আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বিলাল। কিন্তু ওই কাশ্মীরি তরুণের পরিবার জানায়, দিল্লিতে তাদের কোনও আত্মীয় থাকেন না।
নভেম্বরের গোড়ায় কালাশনিকভ হাতে বিলালের ছবি দেখে চমকে ওঠেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। জানা যায়, বিলাল আইএসের জম্মু-কাশ্মীর শাখায় যোগ দিয়েছেন। আরও এক শিক্ষিত তরুণ জঙ্গি দলে যোগ দেওয়ায় উদ্বেগ বাড়ে প্রশাসনের।
এক পুলিশ-কর্তা জানিয়েছেন, তখন থেকেই বিলালের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তাঁরা। তবে কী ভাবে বিলালকে ফেরানোর প্রক্রিয়া চলেছে তা নিয়ে এখনও মুখ খুলতে রাজি নয় বিলালের পরিবার ও প্রশাসন। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘আজ শ্রীনগরের খানিয়ারে বাড়িতে এসে হাজির হয় এহতিশাম। ওর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছিল। একটু পরেই পুলিশ এসে ওকে নিয়ে যায়।’’ ছেলের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারেননি বিলালের বাবা বিলাল আহমেদ সফি। তাঁর কাতর আর্জি, ‘‘ওর শরীরটা ভাল নেই। আগে যেন পুলিশ ওকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’’
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি এস পি পাণি বলেন, ‘‘ এক তরুণ ফিরে এসেছেন। আরও অনেককে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, বিলালকে পরে আরও সুরক্ষিত কোনও স্থানে সরানো হবে। ফের পড়াশোনা শুরু করবেন তিনি।