দিল্লির মুুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই ।
আবগারি মামলায় দিল্লির শাসকদল আম আদমি পার্টি (আপ)-এর বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চায় ইডি। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে তারা দ্বিধার মধ্যে রয়েছে। বুধবার দিল্লি হাই কোর্টে এমনটাই জানাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডির হয়ে এই মামলা লড়ছেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) এস ভি রাজু। গ্রেফতারি চ্যালেঞ্জ করে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল আদালতে যে আবেদন করেছেন, তা-ও প্রত্যাখ্যান করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন রাজু।
দিল্লি হাই কোর্টে কেজরীওয়ালের মামলার শুনানি চলাকালীন ইডি দাবি করে, ‘‘আমরা আপ-এর কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চাই। কিন্তু যদি আমরা তা করি, তা হলে প্রশ্ন উঠবে নির্বাচনের সময় আমরা এ সব কী করছি? আর যদি বাজেয়াপ্ত না করি, তা হলে আবার প্রশ্ন উঠবে প্রমাণ কোথায়? আমরা ‘ক্যাচ ২২’ (‘ক্যাচ ২২’ হল এমন এক পরিস্থিতি যা পরস্পরবিরোধী নিয়ম বা সীমাবদ্ধতার কারণে এড়ানো যায় না। আমেরিকার লেখক জোসেফ হেলার তাঁর ‘ক্যাচ ২২’ বইয়ে প্রথম এই শব্দের ব্যবহার করেন।) পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি।’’
ইডি আদালতে আরও জানিয়েছে যে, আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়ালের ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়ে তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। পাশাপাশি, কেজরীওয়াল ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যে আবেদন করেছেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘এই আবেদন এমন ভাবে করা হয়েছে যেন এটি গ্রেফতার বাতিলের আবেদন নয়, জামিনের আবেদন।’’
ইডির আইনজীবীর দাবি, রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে কেজরীওয়াল জানিয়েছিলেন, ইডি যত দিন চায়, তাঁকে হেফাজতে রাখতে পারে। আবার অন্য দিকে, তিনি গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন জানিয়েছেন। ‘‘এক জন একসঙ্গে দু’নৌকায় পা দিয়ে চলতে পারেন না’’ বলেও মন্তব্য করেছেন এএসজি রাজু।
প্রসঙ্গত, দিল্লির আবগারি মামলায় কেজরীওয়ালকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। সোমবার বিকেলে কেজরী তিহাড়ে প্রবেশ করেছেন। তিহাড়ের দু’নম্বর সেলের ১৪ বাই ৮ ফুটের একটি কক্ষে আপাতত ঠাঁই হয়েছে তাঁর।
অন্য দিকে, কেজরীওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির দাবি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে যখন গ্রেফতার করা হয়, তখন আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ ছিল। তাই তাঁর গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সিঙ্ঘভির কথায়, ‘‘ইডি বলেছে যে, কেজরীওয়াল হেফাজতের বিরোধিতা করেননি, তাই তাঁর আবেদন যুক্তিযুক্ত নয়। তা হলে কি কেজরীওয়াল হাল ছেড়ে দেবেন?’’
দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পর ইডির গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে আপপ্রধানের মামলার রায়দান সংরক্ষিত রেখেছে দিল্লি হাই কোর্ট।