লালু-পুত্র তেজস্বীকে মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে ইডি। ফাইল চিত্র।
‘জমির বদলে চাকরি’ দুর্নীতি মামলায় বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদবকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও এক বার ডেকে পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। হোলির আগেই তেজস্বীর দিল্লির বাড়ি-সহ ২৪টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ এবং সম্পত্তির হদিশ পাওয়ার কথা জানিয়েছিল ইডি। যদিও ইডির দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে আরজেডি নেতা তেজস্বী জানান, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি তল্লাশি চালিয়ে কিছুই পায়নি। তল্লাশি চালিয়ে কোন কোন জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে, তা প্রকাশ্যে আনারও দাবি জানান তিনি। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তেজস্বী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে গুজব রটাচ্ছে, মিথ্যা খবর তৈরি করছে।”
ইডির তরফে দাবি করা হয়, তল্লাশি চালিয়ে নগদ ৭০ লক্ষ টাকা, দু’কিলোগ্রাম সোনা এবং ৯০০ আমেরিকান ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১১ মার্চ এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য দিল্লির দফতরে তেজস্বীকে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী হাজির হননি। তার আগে অবশ্য আরজেডি প্রধান লালু, তাঁর স্ত্রী রাবড়ি দেবী এবং কন্যা মিসা ভারতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে অসুস্থ হয়ে পড়েন তেজস্বী-পত্নী রাজশ্রী। জমির বিনিময়ে চাকরি মামলায় লালু, রাবড়ি-সহ মোট ১৬ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সমন জারি করেছিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সিবিআইয়ের পেশ করা চার্জশিটের ভিত্তিতে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে লালুদের জবাব তলব করা হয় ওই সমনে। ঘটনাচক্রে, তার পরেই নতুন করে ‘সক্রিয়তা’ শুরু করে সিবিআই এবং ইডি।
লালু প্রথম ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন (২০০৪-০৯) বিহারের বহু যুবককে জমির বিনিময়ে রেলের ‘গ্রুপ ডি’ পদে নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। আঙুল ওঠে লালুর স্ত্রী তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি এবং তাঁদের দুই কন্যা মিসা এবং হেমার বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে গত বছরের ২০ মে সিবিআই পটনা, দিল্লি-সহ দেশের মোট ১৫টি জায়গায় সিবিআই তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল। এর পর অগস্টে অভিযান চালানো হয় আরজেডির একাধিক নেতার বাড়িতে। গত ২২ অক্টোবর ‘জমির বদলে চাকরি’ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট পেশ করে সিবিআই। লালু, রাবড়ি এবং তাঁদের দুই কন্যা মিসা ভারতী এবং হেমা যাদবের নামও রয়েছে। এ ছাড়াও আরও ১২ জনের নাম রয়েছে চার্জশিটে। সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, লালুপ্রসাদ রেলমন্ত্রী থাকার সময় বিভিন্ন ‘অযোগ্য’ ব্যক্তিকে মুম্বই, জব্বলপুর, কলকাতা-সহ রেলের বিভিন্ন জ়োনে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, অবৈধ উপায়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা টাকা বা জমি নিয়েছিলেন লালুর পরিবার এবং ঘনিষ্ঠ নেতারা।