ডিকে শিবকুমার
পি চিদম্বরমের পরে ডিকে শিবকুমার।
আইএনএক্স মিডিয়া দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরমের গ্রেফতারির পরে এ বার কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার গড়ার অন্যতম কারিগর ডিকে শিবকুমারকে হেফাজতে নিল ইডি। কালো টাকা পাচারের মামলায় তদন্তকারী সংস্থাটি কয়েকদিন ধরেই শিবকুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। ইডির দাবি, তদন্তে সহযোগিতা করছিলেন না কর্নাটক কংগ্রেসের এই শীর্ষস্থানীয় নেতা। চিদম্বরমের ক্ষেত্রেও অবশ্য একই অভিযোগ এনেছিল সিবিআই।
শিবকুমারের গ্রেফতারির পরে টুইট করে কংগ্রেস বলেছে, ‘‘আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির তীব্র নিন্দা করছি। শিবকুমারের গ্রেফতারি নরেন্দ্র মোদী সরকারের ব্যর্থ নীতি এবং দেশের বেহাল অর্থনীতি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দেওয়ার জন্য আরও একটি প্রয়াস।’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার মন্তব্য, ‘‘শিবকুমার নির্দোষ। বদলার রাজনীতি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা এ নিয়ে আদালতে লড়ব, জনতার আদালতেও যাব।’’
গ্রেফতারির পরে শিবকুমারের টুইটার হ্যান্ডলে একটি বক্তব্য সামনে এসেছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘আমাকে গ্রেফতার করার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য বিজেপির বন্ধুদের অভিনন্দন। আমার বিরুদ্ধে আয়কর দফতর ও ইডির আনা অভিযোগ পুরোপুরি ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার। দলের কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের বলছি, দুঃখ পাবেন না। কোনও অনৈতিক কাজ করিনি। ... ঈশ্বর ও দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে আইনি ও রাজনৈতিক লড়াইয়ে ঠিকই জিতব।’’
ইডি সূত্রের দাবি, ২০১৭ সালের অগস্ট মাসে কর্নাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী শিবকুমারের বিভিন্ন ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩০০ কোটির বেশি কালো টাকা উদ্ধার হয়েছে। সেই সময়েই গুজরাতে রাজ্যসভার ভোটপর্ব চলছিল। গুজরাত কংগ্রেসের ৪৩ জন বিধায়ককে বেঙ্গালুরুর রিসর্টে এনে রেখেছিলেন শিবকুমার। সেখান থেকেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে যান তদন্তকারীরা। কর্নাটকে বিজেপির বিকল্প হিসেবে এইচডি কুমারস্বামীর সরকার গড়ার পিছনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন শিবকুমার। কুমারস্বামী সরকারকে সঙ্কট থেকে বাঁচাতে কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়কদের ফের দলে টানার জন্য মুম্বইয়ে পৌঁছেছিলেন তিনি। শেষ রক্ষা অবশ্য হয়নি।
গত সপ্তাহেই কর্নাটক হাইকোর্ট শিবকুমারের গ্রেফতারির উপর রক্ষাকবচ তুলে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার তাঁকে দিল্লিতে তলব করে ইডি। ৫৭ বছর বয়সি কংগ্রেস নেতা দিল্লি পৌঁছলে বিকেল থেকেই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব শুরু হয়ে যায়। সোমবার গণেশ চতুর্থীর দিনেও চলেছে জিজ্ঞাসাবাদ। ক্ষুব্ধ শিবকুমার মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘বাবার জন্য পুজোও দিতে পারলাম না। গণেশ পুজোয় বাড়ির সকলের সঙ্গে কাটাব ভেবেছিলাম, ইডি সেই সুযোগও দিল না।’’
এর পরেই এল গ্রেফতারির খবর।