নরেশ গয়াল। —ফাইল চিত্র।
ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হিসাবে নেওয়া টাকার একাংশ দিয়ে আসবাবপত্র এবং গয়না কিনেছিলেন জেট এয়ারওয়েজ়ের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল। শনিবার মুম্বইয়ে অর্থ তছরূপ প্রতিরোধ আইন সংক্রান্ত আদালতে এমনটাই দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। শনিবার ইডির তরফে নরেশকে ১৪ দিনের জন্য নিডজেদের হেফাজতে চাওয়া হয়। আদালত যদিও নরেশকে ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
শনিবার আদালতে ইডির আইনজীবী জানান যে, ঋণ হিসাবে নেওয়া ৯৪৬ কোটি টাকা নিজেদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কাজে লাগিয়েছে গয়াল পরিবার। আসবাব এবং গয়না কিনতে কিছু টাকা ব্যয় করেছেন নরেশ এবং তাঁর স্ত্রী অনিতা। এমনকি নরেশের কন্যা নম্রতা বাড়ির পরিচারকদের ঋণের টাকা থেকেই বেতন দিয়েছেন।
কানাড়া ব্যাঙ্কের ৫৩৮ কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে শুক্রবার ইডির হাতে গ্রেফতার হন নরেশ। মুম্বইয়ে জেট এয়ারওয়েজ়ের অফিসে বেশ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইন (পিএমএলএ)-এর আওতায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। গত বছরের নভেম্বরেই নরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন কানাড়া ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। প্রতারণা এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয় নরেশ, তাঁর স্ত্রী অনিতা এবং গৌরাঙ্গ শেট্টি নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অভিযোগে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বলেন, জেট এয়ারওয়েজ় (ইন্ডিয়া) লিমিটেডকে (জেআইএল) ৮৪৮.৮৬ কোটি টাকার যে ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল তার মধ্যে ৫৩৮.৬২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ব্যাঙ্কের আরও অভিযোগ ছিল যে, জেআইএল নিজেদের অডিটে দেখিয়েছিল যে, তারা তাদের বিভিন্ন সংস্থাকে সীমার বাইরে গিয়ে ১৪০০ কোটিরও বেশি টাকা দিয়েছিল।
এ বছর মে মাসে নরেশের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করে সিবিআই এবং আর্থিক তছরুপের মামলা করে ইডি। মে মাসেই নরেশের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় সিবিআই। নরেশ ছাড়াও জেটের একাধিক প্রাক্তন আধিকারিকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল। দিল্লি, মুম্বই-সহ দেশের ৭টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সিবিআইয়ের দাবি ছিল, কানাড়া ব্যাঙ্কের ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ নয়ছয় করেছেন জেট-কর্তা নরেশ। এই দুর্নীতিতে সংস্থার বেশ কয়েক জন আধিকারিকও অভিযুক্ত।