প্রতীকী ছবি।
করোনা-সঙ্কটের আগে থেকেই অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছিল। এ বার সমস্ত পূর্বাভাস চলতি অর্থবর্ষে গভীর আর্থিক মন্দার দিকে ইঙ্গিত করছে বলে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা প্রকাশ করলেন। দিল্লি, কলকাতা ও অন্য শহরের অর্থনীতিবিদদের নিয়ে তৈরি ‘দ্য হেটেরোডক্স ইকনমিস্টস কালেক্টিভ’-এর মতে, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় সরকারের দাওয়াই খুবই দুর্বল। ফলে প্রথম দিকে আইএমএফ-এর মতো সংস্থা যে পূর্বাভাস করেছে, মন্দা আরও গভীর হবে।
অতিমারি ও অর্থনীতির জোড়া সঙ্কট এবং মোদী সরকারের দাওয়াই নিয়ে এই অর্থনীতিবিদদের রিপোর্ট প্রকাশ করে আজ জেএনইউয়ের অধ্যাপিকা জয়তী ঘোষ বলেন, ‘‘আরও খারাপ সময় আসছে।’’ অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন, মন্দায় পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে রাজকোষ ঘাটতি না বাড়ানোর পিছনে কোনও যুক্তি নেই। অর্থনীতি চাঙ্গা হলে, আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়লে, লাভ-আয়-সম্পদের উপর কর বসিয়ে ফের রাজকোষে ভারসাম্য ফেরানো সম্ভব।
কী করা উচিত ছিল মোদী সরকারের? অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, অঞ্জনা থাম্পি, দীপা সিন্হা, রোহিত আজাদ, প্রসেনজিৎ বসু, শুভনীল চৌধুরী, সঙ্গীতা ঘোষের মতো অর্থনীতিবিদদের মতে, অন্তত ১০ লক্ষ কোটি টাকা রাজকোষ থেকে খরচ, সকলের জন্য ছয় মাস বিনামূল্যে রেশন, আয়ের দিক থেকে নীচের সারির ৮০ শতাংশ মানুষকে ১৫ হাজার টাকা নগদ, মনরেগা-য় ২০০ দিনের কাজ, রাজ্যকে বাড়তি অর্থ সাহায্য, পরিকাঠামোয় লগ্নি ও সম্পদ কর বসানোর প্রয়োজন ছিল।
আরও পড়ুন: অতিমারিতে থমকে যাওয়া শাহিন বাগ ফের জাগছে
আরও পড়ুন: আমপানের শক্তি ছিল না, ১ প্রাণ কেড়ে স্তিমিত নিসর্গ
গ্রামে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য মনরেগা-য় বাড়তি বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের যুক্তি, মনরেগা-য় ১৩.৮৬ কোটি জব কার্ড রয়েছে। সবাইকে ২০২ টাকা মজুরিতে ১০০ দিন কাজ দিতে হলে ২.৮ লক্ষ কোটি টাকা দরকার। কিন্তু বরাদ্দ হয়েছে ১ লক্ষ কোটি টাকা। অতিমারির মোকাবিলা নিয়ে তাঁদের যুক্তি, কঠোর লকডাউনেও সংক্রমণ বৃদ্ধির হার কমেনি। গত এক সপ্তাহে করোনায় প্রতিদিন গড়ে ২০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।