দিল্লিতে ভূমিকম্পের পর আতঙ্কে অফিস ছেড়ে রাস্তায় নেমে এসেছে মানুষ। নিজস্ব চিত্র।
বড়সড় ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সমগ্র উত্তর ভারত। সোমবার দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ মৃদু ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে দিল্লিও। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। এর জেরে কেঁপে ওঠে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এ দিন কম্পনেরর উত্সস্থল ছিল আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৯৬ কিলোমিটার গভীরে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক।
কম্পনের পর এ দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেন, “আফগানিস্তান-পাকিস্তানে বড়সড় ভূমিকম্পের কথা শুনেছি। ভারতেও এর প্রভাব পড়েছে। প্রার্থনা করি সকলেই সুরক্ষিত আছেন। কোথায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান-সহ যেখানে যেখানে সাহায্যের প্রয়োজন তার জন্যও প্রস্তুত আমরা। ”
এ দিন দিল্লিতে কম্পন অনুভূত হতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘর-বাড়ি, অফিস ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন লোকজন। সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয় মেট্রো পরিষেবা। বেশ কয়েকটি উড়ালপুলে ফাটলও ধরেছে বলে জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল দিল্লিবাসীদের উদ্দেশে টুইট করেন, “আতঙ্কিত হবেন না। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে।”
শ্রীনগরেও ব্যাপক কম্পন অনুভূত হয়েছে। এর জেরে সেখানে টেলিফোন পরিষেবাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। জাহাঙ্গির চকের একটি উড়ালপুলে ফাটল ধরে। যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সেখানে এক বাসিন্দার কথায়, “বাড়িগুলো এমন ভাবে দুলছিল যে ২০০৫-এর ভয়াবহ কম্পনের স্মৃতি ফিরে এসেছিল মনের মধ্যে।” ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি জানিয়েছে, হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চল অতি ভূমিকম্পপ্রবণ বলে চিহ্নিত।
পাকিস্তানে প্রায় ৪০ সেকেন্ড মতো কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের জেরে সেখানে ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। অন্য দিকে, আফগানিস্তানেও মৃত্যু হয় প্রায় ১৭ জনের।
নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরই ভূবিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছিলেন মাঝে মাঝেই ছোটখাটো কম্পন হতে পারে। আফটারশকেরও সতর্কতা জারি করেছিলেন তাঁরা। তা হলে তাদের সেই সতর্কতাকে সত্যি করে আরও বড় ধরনের ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে?