ফাইল চিত্র।
দিল্লি-আগরার চাঁদিফাটা গরমের সময় মুঘল সম্রাটরা কাশ্মীরে চলে যেতেন। আকবরের সময় থেকেই এই প্রথা শুরু হয়েছিল। তার পর জহাঙ্গির, শাহজাহান, আওরঙ্গজেবের সময়ও দিল্লি বা আগরা ছেড়ে গরমের সময়টা কাশ্মীরে কাটিয়ে আসার প্রথা বজায় ছিল। তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে ইংরেজ শাসকরাও গ্রীষ্মকালে চলে যেতেন শিমলা, মুসৌরি, দার্জিলিঙের মতো শৈলশহরে।
মুঘল-ব্রিটিশদের পথে হেঁটে এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাপপ্রবাহের মধ্যে দিল্লির বদলে শিমলার মতো কোনও শৈলশহরে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইছেন। সামনেই নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী সেই পরিষদের অধ্যক্ষ। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও এই পরিষদের সদস্য। কেন্দ্র, রাজ্য মিলে উন্নয়নের নীতি নির্ধারণে চলতি মে মাসেই বা খুব বেশি দেরি হলে জুন মাসে বৈঠক ডাকা হবে। সরকারি সূত্রের খবর, অন্যান্য বারের মতো দিল্লির বদলে এ বার শিমলায় বৈঠক ডাকার ভাবনাচিন্তা চলছে।
হিমাচল প্রদেশে এখন বিজেপির সরকার। বছরের শেষে গুজরাতের সঙ্গে হিমাচলেও বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে হিমাচলের শৈলশহর শিমলায় প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক ডাকা হলে, হিমাচলকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে রাজ্যের মানুষের কাছেও বার্তা দেওয়া যাবে বলে বিজেপি নেতারা মনে করছেন। এক ঢিলে দুই পাখি মারা হবে। সরকারি কর্তারা অবশ্য বলছেন, এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি। আয়োজনের বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। সম্ভব হলে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা না করে মে মাসের মাঝামাঝি সময়েই বৈঠক হতে পারে।
মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে যোজনা কমিশন তুলে দিয়ে নীতি আয়োগ তৈরি হয়। এখনও পর্যন্ত ছ’বার পরিচালন পরিষদের বৈঠক হয়েছে। প্রথম দিকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, তার পরে রাষ্ট্রপতি ভবনেই এই বৈঠক হয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে অবশ্য কোভিডের কারণে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক হয়েছিল। ২০২০-তে অতিমারি পরিস্থিতিতে হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ২০১৯-এর দিল্লির বৈঠক বা তার পরে গত বছরের ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগ দেননি। তাঁর দাবি ছিল, নীতি আয়োগের হাতে অর্থ বরাদ্দের কোনও ক্ষমতা নেই। আগের মতো জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের বৈঠকের আয়োজন করা হোক।
মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এ বারই প্রথম দিল্লির বাইরে করার পরিকল্পনা হলেও এর আগে মোদী বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দিল্লির বাইরে অন্য শহরে বৈঠক করেছেন। আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প, চিনের শি জিনপিং, ব্রিটেনের বরিস জনসনকে তিনি আমদাবাদ বা মহাবলীপুরমে নিয়ে গিয়েছেন। শিনজো আবেকে নিয়ে গিয়েছিলেন বারাণসীতে।