গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
কর্নাটকের মন্দিরে ঢুকতে এ বার থেকে পোশাকের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে মহিলাদের। কয়েক দিনের মধ্যেই এ নিয়ে একটি সরকারি ফরমান জারি হতে চলেছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মন্দিরগুলিতে নজরদারি চালায় যে সরকারি ধর্মীয় পরিষদ, তারা বলেছে, মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে মহিলা এবং পুরুষ নির্বিশেষে যথাযথ ‘হিন্দু পোশাক’ পরতে হবে। মহিলাদের নিজেদের শরীর যথাযথ ভাবে ঢাকা দিতে হবে। অন্যথায় মন্দিরে প্রবেশ করা যাবে না।
কর্নাটকের মন্দিরে মহিলাদের পোশাক কেমন হবে? এক পুরোহিত তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মেয়েদের ক্ষেত্রে হিন্দু পোশাক শাড়ি হলেই সবচেয়ে ভাল। শাড়ি কী ভাবে পরা হবে তা-ও বলে দিয়েছেন তিনি। ক্যামেরার সামনে ওই পুরোহিতকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘শাড়ি এমন ভাবে পরতে হবে যাতে মহিলাদের বক্ষদেশ যথাযথ ভাবে ঢাকা পড়ে।’’ পুরুষরা কী পরবেন, সে ব্যাপারে অবশ্য ওই পুরোহিতের কোনও বক্তব্য নেই। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পুরুষ পুণ্যার্থীদের পোশাক কী হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। বিষয়টি আপাতত আলোচনাধীন।’’
কর্নাটকের ওই পুরোহিতের নাম হরিনারায়ণ আশরানা। তিনি দক্ষিণ কন্নড় মন্দিরের প্রশাসনিক সদস্য। মেয়েরা কী ভাবে শাড়ি পরবেন, তা বলে দেওয়ার পাশাপাশি মন্দিরে পুণ্যার্থীদের জিন্সের প্যান্ট পরার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হরিনারায়ণ। বজরং দলও এ নিয়ে পোস্টার সেঁটেছে মন্দিরের দেওয়ালে। পোশাক নির্দেশিকা পালনে যাতে কোনও বিচ্যুতি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই ওই পোস্টার।
কর্নাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার ২১১টি মন্দিরের উপর নজরদারি চালায় সরকারি পর্ষৎ ‘কর্নাটক স্টেট ধার্মিক পরিষৎ’। মন্দিরে পোশাক ফরমান জারি করার নেপথ্যে মূলত তারাই। পর্ষতের বক্তব্য, মন্দিরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। বিষয়টি বাধ্যতামূলক করতে তাই দক্ষিণ কন্নড়ের প্রতিটি মন্দিরে ব্যানার ঝোলানোর নির্দেশও দিয়েছে তারা। যদিও নেটমাধ্যমে এই নিয়মের প্রতিবাদে অনেকে সরব হয়েছেন। ‘২০০ বছর আগের ভারতে বাস করছি’ বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।