গান ধরেছেন গণেশ। ছবি: টুইটার।
বছর পেরোতে না পেরোতেই ফের প্রশ্নের মুখে বিহারের মেধা তালিকা। গত বারের রুবি রায়ের ‘ক্ষত’ মেলানোর আগেই এ বার গণেশ কুমার। বিহার উচ্চ মাধ্যমিকের কলা বিভাগের ‘টপার’ গণেশ কুমারের মেধা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়েছে। সন্দেহ তার স্কুল নিয়েও। যদিও বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির চেয়ারম্যান আনন্দ কিশোর আজও দাবি করেছেন, ‘‘মেধা তালিকায় কোনও গোলমাল নেই।’’ একই বক্তব্য শিক্ষামন্ত্রী অশোক চৌধুরীরও।
ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা গণেশ বিহারের সমস্তীপুর জেলার রাজনন্দন সিংহ-জগদীপ নারায়ণ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বয়স ১৭-১৮ বছর হয়। তাঁর বয়স প্রায় ২৪। ফল প্রকাশের পর থেকে তাঁর কোনও খোঁজও পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ তিনি হাজির হন পটনায়। টিভি ক্যামেরার সামনে ভুলভাল উত্তর দিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি করে ফেলেছেন এই ‘টপার’।
গণেশ কুমার হিন্দিতে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৯২ পেয়েছেন। সঙ্গীত থিওরিতে ৩০-এ ১৮ এবং প্র্যাকটিক্যালে ৭০-এ ৬৫ পেয়েছেন। অথচ তাঁর স্কুলে সঙ্গীত শেখানোর কোনও ব্যবস্থাই নেই। টিভির প্রশ্নোত্তরে তাঁর ‘সরগম’-এর সামান্য জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গণেশের স্কুলের পরিকাঠামোও কার্যত নেই। স্কুলে কয়েকটি ক্লাসরুম। ঘরগুলিতে না আছে দরজা, না আছে জানলা। গ্রন্থাগার ও গবেষণাগারের অবস্থাও তথৈবচ। স্কুলে একজন প্রশিক্ষিত শিক্ষকও নেই। এমন স্কুল থেকে কী ভাবে এক ছাত্র মেধা তালিকার শীর্ষে পৌঁছলেন, রহস্য তা নিয়েও। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অ্যাডমিশন ফর্ম ভর্তি করার সময়ে হোম সায়েন্স, মিউজিক, হিন্দি, ইংরেজি ও মনোবিজ্ঞান লিখেছিলেন গণেশ। পরে হোম সায়েন্স কেটে সোশ্যাল সায়েন্স লেখেন। ফর্ম জমা করার কোনও তারিখ নেই। স্থানীয় ঠিকানাও দেওয়া নেই সেখানে। গিরিডির ছেলে কেন এখানে পড়তে এলেন—প্রশ্ন তাতেও।
এরই মধ্যে নীতীশ সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন আবগারি মন্ত্রী জলিল মস্তান। তিনি আজ বলেন, ‘‘গত কাল মন্ত্রিসভা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা দেখেছেন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।’’ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপি নেতা সুশীল মোদী বলেন, ‘‘বিহারের মেধাকে শেষ করছে এই সরকার।’’