ফাইল চিত্র।
রাজ্যগুলি যথেষ্ট সংখ্যক আইএএস অফিসার কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে না এবং তার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারি কাজকর্মে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল কেন্দ্রীয় কর্মী ও প্রশিক্ষণ বিভাগ (ডিওপিটি)। আইএএস (ক্যাডার) ১৯৫৪ আইনটি বদলের প্রস্তাবের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে শুক্রবার তারা এই দাবি তুলেছে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার সচিব অপূর্ব চন্দ্রও আইন বদলের ভাবনাকে সমর্থন করে বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার, উভয়ের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলে আধিকারিকদের দৃষ্টিভঙ্গি আরও সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পাবে।
ডিওপিটি সূত্রের দাবি, রাজ্যগুলির তরফে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশন রিজ়ার্ভে অফিসার পাঠাতে না চাওয়া একটা প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে যুগ্ম-সচিব স্তর পর্যন্ত কেন্দ্রে আইএএস অফিসারদের ঘাটতি লক্ষ করা যাচ্ছে। পরিসংখ্যান দিয়ে ডিওপিটি বলেছে, ২০১১ সালে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে আইএএস-এর সংখ্যা ছিল ৩০৯। সেটা এখন কমে হয়েছে ২২৩। অথচ উপসচিব/ডিরেক্টর স্তরে ২০১৪ সালে আইএএস-এর সংখ্যা যেখানে ছিল ৬২১, সেটা এখন বেড়ে ১১৩০। কিন্তু কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে তাঁদের সংখ্যা ১১৭ থেকে কমে হয়েছে ১১৪। এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারি কাজকর্ম চালাতে রীতিমতো অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে বলে ডিওপিটি-র দাবি। তাই তারা ১৯৫৪-র আইন বদল করার প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, কেন্দ্র অফিসার চেয়ে পাঠালে রাজ্যের না বলার অধিকার আর থাকবে না। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক স্তরে বিতর্কের জন্ম হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছেন।
ডিওপিটি-র যদিও বক্তব্য, কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে অফিসার পাঠানোর প্রক্রিয়াটি বদল হলে সব দিক থেকেই ভাল হবে। কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারণ এবং রূপায়ণের ক্ষেত্রে রাজ্য থেকে আসা অফিসারদের পরামর্শ কাজে লাগানো যাবে। অফিসারদেরও পেশাগত দিক থেকে সুবিধা হবে এবং কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় গতি পাবে। ডিওপিটি-র বক্তব্য, অফিসার না পাঠানোর যুক্তি হিসেবে রাজ্যগুলি বারবার অফিসারের ঘাটতির কথা বলে। ঘাটতি যদি থেকেই থাকে, তা হলে তা কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়কেই ভাগ করে নিতে হবে।
ডিওপিটি-র সুরেই যুক্তি সাজিয়েছেন তথ্য-সম্প্রচার সচিব অপূর্ব চন্দ্রও। তাঁরও মতে, কেন্দ্র ও রাজ্য দু’জায়গায় কাজ করলে অফিসারেরা অনেক সমৃদ্ধ হন, সর্বভারতীয় উদ্দেশ্যও সাধিত হয়। বরং আইএএস অফিসারেরা রাজ্যস্তরে সীমাবদ্ধ থাকলে তাঁদের পক্ষে এবং তাঁদের পেশার পক্ষে সেটা ভাল নয়। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত সরকারের সঙ্গে কাজ করলে আপনার একটা প্রশস্ত দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। রাজ্যে কাজ করে ফের কেন্দ্রে ফিরে এলে সেটা অফিসারদের ব্যক্তিগত বিকাশের পক্ষেই ভাল। তাঁদের কাজ এতে উন্নত হয়। রাজ্যে পড়ে থাকলে একটা প্রাদেশিকতাবোধ তৈরি হয়। দ্রুত পদোন্নতি ছাড়া রাজ্যের অফিসার আর আইএএস অফিসারের তফাৎ থাকে না।’’