ডোনাল্ড ট্রাম্প। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আমেরিকাবাসীর কাছে সচিন তেণ্ডুলকর অথবা বিরাট কোহালির গুরুত্ব কতটা? অথবা ৪৫ বছর আগের বলিউড হিট ‘শোলে’র কথাই বা আমেরিকায় কে কতটা জানেন?
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এ সব প্রশ্ন নিরর্থক। কারণ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আজ মোতেরা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে ৪০ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানকে পাখির চোখ হিসাবে দেখে গেলেন। ‘নমস্তে ট্রাম্প’-কে কাজে লাগিয়ে নিজের দেশে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রচারের কাজ সারলেন ট্রাম্প— এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির।
আজ মূলত গুজরাতবাসীদের সামনে (প্রতি ৪ জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনের মধ্যে একজন গুজরাতের বলে আজ নিজেই জানান) ট্রাম্প তাঁর সরকারের সুশাসনের লম্বা ফিরিস্তি খুলে বসেন। ভারতীয় সংস্কৃতি, বলিউড, ক্রিকেট, দিওয়ালি, হোলির সবিস্তার উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘আমেরিকাতে ব্যক্তিগতভাবে আমরা ভারতীয় সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসেছি, সে দেশে বসবাসকারী ৪০ লক্ষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকানের মাধ্যমে। তাঁরা দুর্দান্ত বন্ধু, সহকর্মী এবং প্রতিবেশী। সত্যিই তাঁরা অসাধারণ।’’ ট্রাম্প বলে চলেন, ‘‘আমাদের জাতীয় জীবনের প্রতিটি দিক সমৃদ্ধ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। তাঁরা বাণিজ্যের কর্ণধার, বিজ্ঞানের পথিকৃৎ, শিল্পে দক্ষ, গবেষণা ও আবিষ্কারে অগ্রণী।’’
আরও পড়ুন: মোদী-ট্রাম্পের ব্যক্তিগত রসায়ন কি জোরাল করতে পারবে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক?
পাঁচ বছরে নিজের কাজের খতিয়ান দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘মার্কিন অর্থনীতি এত চাঙ্গা আগে কখনও ছিল না। চার দিকে মানুষের মধ্যে প্রবল ভালবাসা। বেকারত্বের হার দেশের ইতিহাসে কখনও এত কম ছিল না। আড়াই ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী তৈরি করেছি।’’
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ভোটারদের বেশির ভাগই এত দিন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এই ভোটব্যাঙ্কের একটা অংশের রিপাবলিকানদের দিকে ঝোঁকার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গুজরাতের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই ভোটব্যাঙ্কের কাছে নিজেকে আরও বেশি পৌঁছে দেওয়ার কাজটিই আজ সারলেন ট্রাম্প। এই ভোটব্যাঙ্কের খুবই প্রিয় বলিউড নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ দিন বলেন, ‘‘এই দেশের সৃজনশীল কেন্দ্র বলিউড প্রতি বছরে দু’হাজার ছবি তৈরি করে। গোটা বিশ্ব আমোদিত ভাংড়া নাচ, রোমান্স, নাটক এবং ক্লাসিক ভারতীয় ছবি ‘ডিডিএলজে’(দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে) এবং শোলে দেখে!’’
২০১৫ সালে ভারত সফরের সময়ে ‘ডিডিএলজে’-তে কাজলকে বলা শাহরুখের সংলাপ শুনিয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও।