ছবি: রয়টার্স।
ফের চা-ওয়ালার গল্প! কথক এ বার খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এক সময়ে মোদীর চা-বিক্রির কাহিনিতে মজেছিল গোটা দেশ। সেই তালিকায় যে ট্রাম্পও জুড়েছেন, তা কে জানত! আমদাবাদের মোতেরা স্টেডিয়ামে দাঁড়িয়ে আজ মোদীর চা বেচার কাহিনি শোনালেন ট্রাম্প। বললেন, পরিশ্রম করলে একজন ব্যক্তি যে কোনও উচ্চতায় পৌঁছতে পারেন। চা-ওয়ালা থেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নরেন্দ্র মোদীর সফর যে কোনও মানুষকে লক্ষ্য ছুঁতে অনুপ্রাণিত করতে পারে বলেই মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ছোটবেলায় বডনগর স্টেশনে বাবার সঙ্গে চা বিক্রি করতেন মোদী। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে দেশবাসীকে এমন তথ্য জানিয়ে চমকে দেন তিনি। আজ মোতেরা স্টোডিয়ামে দাঁড়িয়ে সেই চা বিক্রির স্মৃতিকে উস্কে দিলেন ট্রাম্প। বললেন, ‘‘বাবার সঙ্গে চা বিক্রি করে মোদী জীবন শুরু করেছিলেন। কৈশোরে এই শহরের ‘ক্যাফেটেরিয়া’-তেও কাজ করেছেন। তাঁর জীবন বুঝিয়ে দিচ্ছে, এই দেশ কতটা সম্ভাবনাময়। তিনি শুধু গুজরাতের নন, গোটা ভারতের কাছেই কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠার জলন্ত প্রমাণ। মোদী দেখিয়েছেন, ভারতীয়রা চাইলে যে কোনও লক্ষ্য ছুঁতে পারে।’’ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে তাঁর মূল্যায়নের কথা জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘সকলেই তাঁকে ভালবাসে। কিন্তু আমি বলছি, উনি খুব দৃঢ়চেতা ব্যক্তি।’’ ট্রাম্পের কথায়, ‘‘ভারতের মতো দেশে অন্যতম সফল প্রধানমন্ত্রী মোদী। গত বছর প্রায় ৬০ কোটি লোক তাঁকে বিপুল ভাবে জিতিয়ে আনেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় গণতান্ত্রিক নির্বাচন হয়নি।’’
আরও পড়ুন: ভারতের একতা বিশ্বের প্রেরণা, মোদীকে স্বস্তি দিয়ে বার্তা ট্রাম্পের
পিছিয়ে ছিলেন না মোদীও। তিনি বলেন, ‘‘ট্রাম্প সব সময়েই বড় মাপের চিন্তাভাবনা করেন। আমেরিকার স্বপ্ন পূরণে তাঁর প্রয়াসের কথা গোটা দুনিয়া জানে। তাঁর জমানায় ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে।’’ মোদীর দাবি, আজকের সফরের পরে দু’দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায় শুরু হবে।
মোদীর পাশাপাশি এ দেশের মানুষের প্রশংসায় সরব হন ট্রাম্প। বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক উত্থানের মতোই এ উত্থান প্রেরণাদায়ক।’’ মোতেরায় উপস্থিত লক্ষাধিক দর্শকের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আপনাদের দেশ উন্নয়নের পথে হাঁটছে। আমেরিকা ভারতের জন্য গর্বিত। ভারতীয়দের চমকপ্রদ উত্থানের পিছনে রয়েছে শক্তিশালী গণতন্ত্র, বৈচিত্র আর এখানকার শিক্ষিত সমাজ। মানবতার প্রশ্নে ভারত বিশ্বের আশা-ভরসার জায়গা।’’
মোদী সরকারের আমলে বেশ কিছু সংস্কারমুখী পদক্ষেপ হয়েছে বলে মনে করেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, পৃথিবীর মানুষ এমন সংস্কার দেখতে আগ্রহী। আর এর ধরনের পদক্ষেপের ফলে স্বাধীনতার সত্তর বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতির বহর ছয় গুণ বেড়েছে। গত এক দশকে ভারতের ২৭ কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার বাইরে এসেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘মোদীর শাসনে ভারতের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। ৩২ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছেছে ইন্টারনেট। ৭০ কোটি মানুষ রান্নার গ্যাস ব্যবহার করছেন। প্রতি মিনিটে ১২ জন করে ভারতীয় দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠতে সক্ষম হচ্ছেন।’’ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন ভাল কথা। কিন্তু উনি কি জানেন, মোদী সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে কয়েক বছরে কত লক্ষ লোকের চাকরি গিয়েছে?’’