ছবি: এএফপি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানালেন, ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মোদীর দাবি, একুশ শতকে এটাই দু’টি দেশেরর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের অংশীদারিকে এক ধাপ উচ্চতায় তুলে সামগ্রিক আন্তর্জাতিক কৌশলগত সম্পর্কে পরিণত করব। সম্পর্ককে এই উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার পিছনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অমূল্য অবদান রয়েছে।’’
পরে বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সাংবাদিকদের জানান, দুই রাষ্ট্রনেতারর মধ্যে শক্তি, বাণিজ্য, প্রযুক্তি ছাড়াও আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিস্তারিত কথা হয়েছে, ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অবাধ বাণিজ্য ও যাতায়াত, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মতো বিষয় নিয়েও।
ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের আধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক বিরোধী জোট গড়ার কাজ চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এ ব্যাপারে ভারতের মুখাপেক্ষী হয়ে থেকেছে। অন্য দিকে ভারতও আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের সঙ্গে জোট তৈরি করে এ ব্যাপারে বেজিংকে কিছুটা চাপে রাখার রণনীতি নিয়ে চলেছে। বিদেশসচিব জানিয়েছেন, আলোচনা হয়েছে এই চর্তুদেশীয় অক্ষ নিয়েও। সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্যই চিনের নাম করেননি শ্রিংলা। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সংযোগ বাড়ানোর বিষয়টি বৈঠকে গুরুত্ব পেয়েছে। নৌ-বাণিজ্য এবং আকাশপথে সংযোগ এবং বাণিজ্য বাড়ানো নিয়ে কথা হয়েছে।’’
ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে সংযোজন
• এত দিন ছিল, ভারত-মার্কিন কৌশলগত সম্পর্ক
• এ বার সামগ্রিক আন্তর্জাতিক কৌশলগত
• এটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাবেকি সমঝোতা থেকে একধাপ উপরে
• প্রযুক্তি ও শিল্প সংক্রান্ত গবেষণা, উন্নয়ন, শক্তি ক্ষেত্র, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়গুলি চলে আসবে এক বন্ধনীতে
• দিকনির্দেশ করবেন মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজে
• মঙ্গলবার নতুন এই তকমার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
• এটা আসলে কী, তার ব্যাখ্যা দেন বিদেশসচিব
এইচওয়ান-বি ভিসা নিয়ে মার্কিন কড়াকড়ির বিষয়টি উদ্বেগে রেখেছে ভারতকে। এ নিয়েও সরব হয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশসচিব বলেন, ‘‘মার্কিন নেতৃত্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি, সে দেশের উচ্চপ্রযুক্তিতে ভারতীয়দের বিপুল অবদান রয়েছে। শুধু পেশাদারি দিক থেকেই নয়, ভারতের গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপট থেকে উঠে আসা ভারতীয়রা যে আমেরিকার ব্যবস্থায় সহজেই খাপ খাইয়ে নিতে পারেন এবং সে দেশের সামাজিক পরিসরে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন, সে কথাও বলা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।’’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের সফর থেকে কী পেলাম আমরা? আমেরিকাই বা কী পেল?
আফগানিস্তানে তালিবানের সঙ্গে ২৯ তারিখ শান্তিচুক্তি করার কথা আমেরিকার। বিষয়টি ভারতের নিরাপত্তার প্রশ্নে উদ্বেগজনক বলেই জানিয়েছিলেন সাউথ ব্লকের কর্তারা। এই নিয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হলে, ভারতের ভূমিকার দিকটিকে এড়িয়ে গিয়ে শুধু বলেন, ‘‘১৯ বছরের হিংসার পরিসমাপ্তি হবে। সকলেই খুশি। এমনকি যাঁরা আমাকে সমর্থন করেন না, তাঁরাও।’’ নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ভারতের উদ্বেগ ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসমুক্ত সুস্থির এবং শান্তিপূর্ণ কাবুল ভারতের জন্য প্রয়োজনীয়।