বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা থেকে এক বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরাচ্ছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। শুক্রবার হিমাচল প্রদেশের মণ্ডীতে। ছবি: পিটিআই।
ছবির মতো সাজানো আমাদের রাজ্য হিমাচল প্রদেশ। সাধারণ জীবনযাপনেই আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু কয়েক দিন ধরে যেন অনিশ্চয়তা গ্রাস করেছে আমাদের।
দিন তিনেক বৃষ্টি হয়ে চলেছে টানা। মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ এসেই আবার চলে যাচ্ছে। বৃষ্টির তোড় কিছুটা কমলে পালা করে বাড়ির লোক ঝর্না থেকে জল নিয়ে আসছে। বাজারে সামান্য কিছু আনাজ উঠছে, সেটুকুই ভরসা। এখন মাঝে মধ্যেই শোনা যাচ্ছে হেলিকপ্টারের শব্দ। শুনেছি, জেলা প্রশাসন ওষুধ, খাবার-সহ বেশ কিছু জরুরি জিনিসপত্র সরবরাহ করছে হেলিকপ্টারের সাহায্যে। প্রতিবেশীদের বেশ কিছু জনের বাড়িতে ইতিমধ্যেই ফাটল ধরেছে। সেই সমস্ত বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু কাছাকাছি কোনও আশ্রয় শিবির খোলার কথা এ পর্যন্ত শোনা যায়নি। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুল-কলেজ। কাজে যেতেও পারছেন না অনেকে।
দিল্লি থেকে মণ্ডী তুলনামূলক ভাবে কাছে। এখানে অনেক কিছু সহজে মিললেও ভিতরের অনেক জায়গায় যথেষ্ট দুর্গম। তার অধিকাংশই এখন ধসে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পৌঁছচ্ছে না কিছুই। মোটরসাইকেল বা স্কুটারে চড়ে ঝুঁকি নিয়ে কোনও রকমে আসার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মেঘভাঙা বৃষ্টি, হড়পা বান আর ভূমিধসের জেরে এ পর্যন্ত রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৫০ ছাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে মণ্ডীতে আটকে পড়েছিলেন ৫১ জনেরও বেশি। শুক্রবার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটির একটি দল প্রায় ১৫ কিলোমিটার হেঁটে পৌছয় বিপর্যয়স্থলে। উদ্ধার করে ১৫টি বাচ্চা-সহ আটকে থাকা সকলকে। অতিবৃষ্টিতে ফুঁসে ওঠা বালাড নদী সেতু ভেঙে বইছে। ফলে বাড্ডি শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
মূলত চাষ ও পর্যটনের উপরে নির্ভরশীল এ রাজ্য। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সমস্যায় আপেলচাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত পর্যটনও। আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাজ্যের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। ভবিষ্যতের আশঙ্কায়, সমাধানের অপেক্ষায় কাটছে আমাদের দিন।
অনুলিখন: ঐশী চট্টোপাধ্যায়