কোটায় লাগানো হচ্ছে স্প্রিং দেওয়া পাখা। ছবি: সংগৃহীত।
রাজস্থানের কোটায় পড়ুয়ামৃত্যু রুখতে স্প্রিং দেওয়া পাখা লাগানোর নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক ওমপ্রকাশ বুনকারের তরফে প্রকাশিত একটি নির্দেশিকায় কোটা শহরের সমস্ত হস্টেল এবং হোটেল কর্তৃপক্ষকে যত শীঘ্র সম্ভব এই পাখা লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন মনে করছে, এই ধরনের পাখায় ঝুলে পড়ে কোনও পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পাখাটি নীচে খুলে পড়ে যাবে। যদিও এই ভাবে কাজের কাজ কতটা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত কোটায় ২২ জন পড়ুয়া আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। সম্প্রতি বিহারের গয়ার বাসিন্দা বাল্মিকী জাঙ্গিদ নামের ১৮ বছরের এক পড়ুয়ার দেহ সেখানকার হস্টেলের একটি ঘর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জয়েন্ট এন্ট্রান্সের চূড়ান্ত পরীক্ষায় (মেইন এগজাম) সফল হতে বাল্মীকি কোটায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল, পরীক্ষায় ভাল ফল করে আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার। কিন্তু সফল হতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি।
প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য পেতে ইদানীং কোটার বিকল্প নেই, অন্তত এমনটাই মনে করেন বহু অভিভাবক। তাই সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় ছেলেমেয়েকে প্রতি বছর কোটায় পড়তে পাঠান বহু মা-বাবা। সেখানে অসংখ্য কোচিং সেন্টারে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়তে প্রশিক্ষণ নেন পড়ুয়ারা। যদিও বহু বার অভিযোগ উঠেছে যে, কোটায় পড়ুয়াদের উপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। গত ডিসেম্বরে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কোটার কোচিং ইনস্টিটিউটগুলিকে একটি নোটিস দিয়ে পড়ুয়াদের এক দিন ছুটি দেওয়ার কথা বলা হয়। সেই নির্দেশ সর্বত্র মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
পাখা লাগানো সংক্রান্ত নির্দেশ কতটা মানা হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। জেলা প্রশাসনকে উদ্ধৃত করে ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাখায় স্প্রিং থাকার পরে কোনও অতিরিক্ত ভার পাখাটির উপর চাপালেই সেটি খুলে মাটিতে পড়ে যাবে। ওই পাখাগুলিতে একটি বৈদ্যুতিন বিপদঘণ্টি থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। এর ফলে কোনও পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করল সতর্ক হয়ে যাবে হস্টেল প্রশাসন। তবে এই ভাবে আত্মহত্যার ঘটনা থামানো যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকেরই।