দীনেশ ত্রিবেদী। ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভার সাংসদ পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কবে বিজেপিতে যোগ দেবেন, তা এখনও স্থির করেননি বলে আজ দিল্লিতে দাবি করলেন দীনেশ ত্রিবেদী। ‘জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে’ পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবেন তিনি। সূত্রের মতে, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে কলকাতা ফিরছেন দীনেশ। এ দিন টুইটে তিনি বলেন, ‘যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি নিজে মাথা উঁচু করে থাকতে চাই, তা হলে তাঁর এটাও বোঝা উচিত, অন্যদেরও মাথা তুলে চলতে হবে। হিংসা ও ভয়ের বাতাবরণ থাকলে মাথা তুলে চলা সম্ভব নয়।’’
গতকাল রাজ্যসভায় নাটকীয় ভাবে ইস্তফা দেওয়ার পরেই জল্পনা শুরু হয়, রাজ্যসভার নির্বাচনে গুজরাত থেকে কি ফের জিতিয়ে আনা হবে দীনেশকে? সেই কারণেই কি এখনও ওই রাজ্যে বিজেপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেননি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা। এ জল্পনাও হয়েছে যে, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল করা হতে পারে দীনেশকে। আজ অবশ্য সব জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন দীনেশ। বিজেপিতে যোগদান প্রশ্নে তিনি বলেন, “শুনেছি, বিজেপি নেতারা আমায় তাঁদের দলে স্বাগত জানিয়েছেন। ওই আমন্ত্রণ সম্মানের। তবে আমি এখন স্বাধীন। জনগণের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ চূড়ান্ত করব। জল্পনা চলছে যে আমি গুজরাত থেকে রাজ্যসভায় দাঁড়াব। এই জল্পনা ঠিক নয়। যদি সাংসদ হওয়াই আমার লক্ষ্য হত, ইস্তফা দিতাম না।” তাঁর এ ভাবে দল ছেড়ে যাওয়া নিয়ে টুইট করেছেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হা। তিনি বলেন, “ঘনিষ্ঠ বন্ধু দীনেশ ত্রিবেদী রাজ্যসভা ও তৃণমূল থেকে ইস্তফা দিলেন। তাঁর ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক বা আর্থিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে কেউ একজন সার্থক মন্তব্য করেছেন—ব্রুটাস তুমিও!”
তৃণমূল ছেড়ে যাওয়ায় দীনেশকে আজ আক্রমণ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটি সভায় তিনি বলেন, ‘‘নির্লজ্জ, দু’কান কাটা। দমবন্ধ হয়ে আসছে বলে বিজেপির আইসিইউ-য়ে ঢুকছে। দমবন্ধ তো মানুষ করবে।’’ জবাবে দীনেশ বলেন, “যখন তৃণমূলের জন্ম হয়, অভিষেক ছোট ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার এখনও শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু তাঁর হাতে আর দল নেই। দলকে জেতাতে কয়েকশো কোটি টাকা কনস্যালট্যান্ট সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে। আমি নারদ কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলাম। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার উপরে হওয়া হামলার নিন্দা করেছি। যার জন্য দলে আমার সমালোচনা করা হয়েছে। যে যাই বলুক, আমার অন্তরাত্মা সাফ। অভিষেক আমার কথার অর্থ বুঝতে পারেননি। আমি আশা করব, অভিষেক আরও বড় হবেন। ওঁর সামনে দীর্ঘ ভবিষ্যৎ রয়েছে।”
নির্বাচনের ঠিক মুখে বিরোধীরা যে ভাবে রাজ্যে হিংসা-দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন, সে ভাবেই কাল থেকে মুখ খুলেছেন দীনেশও। আজ তিনি ফের বলেন, “রাজ্যের মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল। সেখানে দুর্নীতি প্রতি দিন মাথাচাড়া দিচ্ছে। আজ রাজ্যের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, হিংসা ও দুর্নীতি।”