দিলীপ ঘোষ ও অমিত শাহ।— ফাইল চিত্র
পশ্চিমবঙ্গের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কার্যত ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ জানিয়ে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দলীয় সূত্রের দাবি, চিঠিতে রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। তবে রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন ‘অসম্ভব’ বলে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপও চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে খুব শীঘ্রই নির্বাচন কমিশনে যাবেন বিজেপি নেতারা। একই সঙ্গে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব আজ জানিয়েছেন, কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের তিনটি বিল নিয়ে তৃণমূল যে ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে, আগামী মাস থেকেই তার পাল্টা প্রচারে নামবেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
পশ্চিমবঙ্গে আগামী ছয় মাস দলের প্রচারের রণকৌশল কী হবে, তা ঠিক করতে গত কাল থেকে দিল্লিতে বৈঠকে বসেছেন বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা। ঠিক হয়েছে, করোনার ভয় থাকলেও দুর্গাপুজো উপলক্ষে ব্যাপক প্রচারে নামবে দল। প্রচারের অন্যতম বিষয়বস্তু হিসেবে রাজ্যের ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যেমন সরব হবে বিজেপি, তেমনই কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারমুখী বিলের ইতিবাচক দিকগুলি নিয়েও জনসংযোগ চলবে। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘তৃণমূল বিলগুলি নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছ। জবাবে পাল্টা প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
সরকারি অনুষ্ঠানে ওই বিলের পক্ষে প্রায় রোজ মুখ খুলছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবু ওই বিলে কৃষকদের আদৌ লাভ কি না, সে কথা বোঝাতে ব্যর্থ কেন্দ্র। উল্টে পঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদের আন্দোলন প্রতিদিন বাড়ছে। আঁচ ছড়িয়েছে অন্য রাজ্যেও। ইস্তফা দিয়েছেন শরিক অকালি দলের মন্ত্রী। সরব বিরোধীরা সংসদের অধিবেশন বয়কট করেছেন। গ্রাম বাংলাতেও প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি নতুন কৃষি আইনে কোনও ফায়দা হবে? অতীতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের গুরুত্ব বোঝাতে ব্যর্থ হওয়ায় লোকসভার ঠিক পরেই হওয়া বিধানসভা উপনির্বাচনের তিনটি আসনে গো-হারা হারে বিজেপি। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে কৃষি স্পর্শকাতর বিষয়। ওই আইনে লাভ কী হতে পারে, তা এখন থেকেই তুলে ধরতে হবে। তা না-হলে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে যেমন ভুয়ো প্রচার করে হাওয়া কেড়ে নিয়েছিল তৃণমূল, এ ক্ষেত্রেও তা-ই হবে।’’ আগামী ছয় মাসের প্রচারের রণকৌশল চূড়ান্ত করতে আগামিকাল পশ্চিমবঙ্গের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, চলতি অধিবেশন শেষে সাংসদদের রাজ্যে ফিরে নতুন কৃষি আইনের ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরে প্রচারে ঝাঁপানোর নির্দেশই দেবেন দিলীপ-কৈলাস বিজয়বর্গীয়েরা।
আরও পড়ুন: অনড় সরকার পক্ষ, বয়কটে বিরোধীরা, সংসদের পরে আন্দোলন রাজ্যে
আরও পড়ুন: বিরোধীহীন লোকসভায় পাশ শ্রম বিল