গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সার্জিকাল স্ট্রাইকের’ পরে এ বার ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’ চিনের বিরুদ্ধে!
সোমবার টিকটক, ইউসি ব্রাউজার, শেয়ার-ইট, উই-চ্যাট, ক্যামস্ক্যানার সমেত ৫৯টি মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করল কেন্দ্র। তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের দাবি, ভারতের সুরক্ষা, সংহতি, নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং এ দেশের সাধারণ মানুষের তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই আইনের ৬৯ক ধারায় এই সিদ্ধান্ত। লাদাখ সীমান্তে চিন-ভারত সংঘাতের আবহে এই ঘোষণা স্বাভাবিক ভাবেই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষত যেখানে নিষেধের তালিকায় বহুল পরিচিত চিনা অ্যাপের ছড়াছড়ি এবং শুধুমাত্র দেশীয় পণ্য কেনার কথা নিয়ম করে বলছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী।
নিষিদ্ধ চিনা অ্যাপ
টিকটক, শেয়ারইট, ইউসি ব্রাউজ়ার, কোয়াই, বাইডু ম্যাপ, শাইন, ক্ল্যাশ অব কিঙ্গস, ডিইউ ব্যাটারি সেভার, ডিইউ রেকর্ডার, ডিইউ ক্লিনার, ডিইউ ব্রাউজ়ার, হেলো, লাইকি, ইউক্যাম মেকআপ, মি কমিউনিটি, মি ভিডিয়োকল, সিএম ব্রাউজ়ার্স, ভাইরাস ক্লিনার, এপিইউএস ব্রাউজ়ার, রমউই, ক্লাব ফ্যাক্টরি, নিউজডগ, উইচ্যাট, বিউটি প্লাস, উইসিঙ্ক, ইউসি নিউজ, কিউকিউ মেল, কিউকিউ মিউজিক, কিউকিউ নিউজফিড, ওয়াইবো, জ়েন্ডার, বিগো লাইভ, সেলফিসিটি, মেল মাস্টার, প্যারালেল স্পেস, ইএস ফাইল এক্সপ্লোরার, ভিভা ভিডিয়ো-কিউইউ ভিডিয়ো আইএনসি, কিউকিউ প্লেয়ার, ভিগো ভিডিয়ো, নিউ ভিডিয়ো স্টেটাস, ভল্ট-হাইড, ক্যাশ ক্লিনার-ডিইউ অ্যাপ স্টুডিয়ো, ক্যামস্ক্যানার, ক্লিনমাস্টার-চিতা মোবাইল, ওয়ান্ডার ক্যামেরা, ফোটো ওয়ান্ডার, উইমিট, সুইট সেলফি, হাগো প্লে উইথ নিউ ফ্রেন্ডস বাইডু ট্রান্সলেট, ভিমেট, কিউকিউ ইন্টারন্যাশনাল, কিউকিউ সিকিউরিটি সেন্টার, কিউকিউ লঞ্চার, ইউভিডিয়ো, ভি ফ্লাই স্টেটাস ভিডিয়ো, মোবাইল লেজেন্ডস, ডিইউ প্রাইভেসি, মেইটু
বহু অ্যাপের মাধ্যমে চিন তথ্য সংগ্রহ করে বলে অভিযোগ উঠেছে বারে বারে। টিকটকের মতো জনপ্রিয় অ্যাপের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলার। তবু মাঝে কয়েক দিনের নিষেধাজ্ঞা ছাড়া ওই বহুল ব্যবহৃত চিনা অ্যাপের গায়ে এত দিন হাত পড়েনি। তবে প্রশ্ন উঠেছে, কেউ যাতে এই সমস্ত অ্যাপ ব্যবহার করতে না-পারেন, সরকার এখন তা নিশ্চিত করবে কী ভাবে? বিশেষত যেখানে অনেক মোবাইলে তার উপস্থিতি মুছে ফেলার উপায় নেই (বাই ডিফল্ট)। শোনা যাচ্ছে, প্রথমত, গুগল প্লে কিংবা অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের থেকে নতুন করে ডাউনলোড ‘ব্লক’ করতে বলা হবে। আর দ্বিতীয়ত, ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাগুলিকে বলা হবে, ওই অ্যাপগুলির জন্য নেট না-জোগাতে। এই সমস্ত অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ভারতে অবশ্য বিপুল। শুধু টিকটকেরই ১০ কোটির বেশি! চিন্তিত ওই সমস্ত অ্যাপে কাজ করা ভারতীয় কর্মীরা। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সঙ্ঘের আর্থিক শাখা স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ।
আরও পড়ুন: গিলানির ইস্তফায় পালাবদল
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানও এ দিন তাঁর উপভোক্তা বিষয়ক, খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রকে চিনা পণ্য কেনার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তাঁর মন্ত্রকে নির্দেশ জারি হয়েছে, সরকারের জিনিসপত্র কেনার জন্য তৈরি ই-বাজার— জিইএম বা অন্য জায়গা থেকেও যেন চিনা পণ্য কেনা না-হয়। ওই মন্ত্রকের অধীন খাদ্য নিগমের মতো সংস্থাও চিনা পণ্য কিনতে পারবে না। সঙ্ঘ পরিবার চিনা পণ্য বয়কটের ডাক দিলেও সরকার সরাসরি চিনের পণ্যের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। এই প্রথম কেন্দ্রীয় কোনও মন্ত্রক এই ধরনের নির্দেশ জারি করল। এই সমস্ত কিছুর পরে মঙ্গলবার মোদী জাতির উদ্দেশে কী বলেন, নজর এখন সে দিকে।