এ বার জনগণনায় ‘নতুন’ কী দেখতে চলেছে দেশ? —ফাইল চিত্র।
ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েই এ বারের জনগণনা করবে কেন্দ্র? সোমবার আবার এক বার সেই প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরই দেশে জনগণনা শুরু হতে পারে। ২০২৬ সালে প্রকাশ্যে আসতে পারে জনগণনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। সোমবার বিভিন্ন সরকারি সূত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে। অনেকের দাবি, এ বারের জনগণনায় প্রক্রিয়াগত বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হতে পারে। যা জনগণনা প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ করে তুলবে বলে দাবি।
সূত্রের খবর, স্বচ্ছতা বজায়ের প্রথম ধাপ হিসাবেই জনগণনায় ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। মোদী জমানায় বহু ক্ষেত্রই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল হয়ে উঠেছে। নগদের পরিবর্তে মানুষ ঝুঁকেছেন ডিজিটাল মাধ্যমে পেমেন্টের দিকে। এমন বহু উদাহরণ তৈরি হয়েছে বিগত কয়েক বছরে। এ বার জনগণনা প্রক্রিয়াতেও লাগতে চলেছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ১০ বছর অন্তর জনগণনা হয়। সেই মতো ২০২১ সালে দেশে জনগণনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। কবে হবে জনগণনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। সোমবার তার আভাস মিলেছে। সরকার চাইছে ২০২৬ সালের মধ্যেই জনগণনা শেষ করতে। কারণ জনগণনার পরে লোকসভা কেন্দ্রগুলির পুনর্বিন্যাস করা হবে। ২০২৯ সালে পরবর্তী লোকসভা ভোট রয়েছে। তার আগেই ২০২৮ সালের মধ্যে পুনর্বিন্যাসের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকারি এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ জানিয়েছে, আসন্ন জনগণনায় প্রযুক্তিগত অনেক পরিবর্তন করা হতে পারে। এ বারের জনগণনা প্রথম বার ডিজিটাল জনগণনা হতে চলেছে। শুধু তা-ই নয়, গৃহ তালিকা এবং জনসংখ্যা গণনা উভয় ক্ষেত্রেই উত্তরদাতা স্ব-গণনা করার অনুমতি পাবেন। জনগণনার একটি পোর্টাল তৈরির কাজ চলছে। সেই পোর্টালেই জনগণনা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দিয়ে দেওয়া হবে। উত্তরদাতা চাইলেই তাঁর উত্তর দেখতে পাবেন বলে খবরে প্রকাশ।
‘স্মার্ট’ প্রযুক্তি ছাড়াও জনগণনায় আরও নতুন কিছু দেখতে পারে ভারত। শুধু ধর্মের আধারে নয়, এ বারের জনগণনায় ধর্মীয় উপসম্প্রদায়গুলিকেও চিহ্নিত করা হতে পারে। সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিপোর্টে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন ইত্যাদি ধর্মের উল্লেখ যেমন থাকার থাকবে। পাশাপাশি, উপসম্প্রদায়ের উল্লেখও থাকতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, কর্নাটকের লিঙ্গেয়েত বা পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়। অর্থাৎ, অসংরক্ষিত বিভাগের মধ্যে পড়ে কিন্তু নির্দিষ্ট সম্প্রদায় হিসাবে চিহ্নিত, গণনায় তাদের কথা আলাদা করে উল্লেখ থাকতে পারে।
আসন্ন জনগণনায় কি জাতিগত সমীক্ষা হবে? সেই প্রশ্নও উঠছে। একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দল জাতিগত সমীক্ষার দাবি তুলেছে সাম্প্রতিক অতীতে। শুধু তা-ই নয়, সরকার পক্ষে থাকা এনডিএ শরিক নীতীশের জনতা দল (ইউনাইটেড)-ও জাতিগত সমীক্ষার উপর জোর দিয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কেন্দ্র কোনও সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি। সরকারি সূত্রে খবর, এ বারের জনগণনায় জাতিগত সমীক্ষা না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে সাধারণ, তফসিলি জাতি এবং জনজাতির ভিত্তিতে তথ্য সমীক্ষায় জায়গা পেতে পারে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।