-ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাজ়মা থেরাপি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিল আইসিএমআর। আগেই স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছিল, করোনার চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাজ়মা থেরাপিতে কোনও লাভ হচ্ছে না। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক প্লাজ়মা থেরাপি বাতিলের ঘোষণা করল। এই নিয়ে একটি সার্বিক সমীক্ষা চালানো হয়েছিল ৩৯টি হাসপাতালের কয়েক হাজার রোগীর উপরে। তাতে দেখা গিয়েছে, প্লাজ়মা থেরাপির ফলে কোভিড আক্রান্ত রোগীর তেমন শারীরিক উন্নতি হয়নি। আইসিএমআরের ডিজি বলরাম ভার্গব আজ জানিয়েছেন, কোভিড প্রোটোকল চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে প্লাজ়মা থেরাপিকে বাদ দেওয়া হবে।
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রক এ-ও জানিয়েছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্যকার্ড আবশ্যিক নয়। ডিজিটাল স্বাস্থ্যকার্ডের পাশাপাশি ভোট দেওয়ার জন্য যে-সব পরিচয়পত্র গৃহীত হয়, ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রেও সেগুলি গ্রাহ্য হবে। এর পাশাপাশি বলরাম আজ জানিয়েছেন, দেশে সর্বাধিক পাঁচ মাস পর্যন্ত কোভিড আক্রান্তদের শরীরে অ্যান্টিবডি থাকছে। তার পরে কোভিড-জয়ীর পুনঃসংক্রমণের সম্ভাবনা থাকছে। তাই করোনার প্রকোপ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও মাস্ক পরা-সহ অন্য বিধি পালন একান্তই জরুরি।
ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যাবতীয় পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই তৈরি বলেও আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে। ভ্যাকসিন বাজারে চলে এলে আগামী বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত কোথায় কাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, সেই বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। সেই জন্য কত পরিমাণ ভ্যাকসিন লাগতে পারে, কত জন স্বাস্থ্যকর্মী প্রয়োজন, বিশেষজ্ঞদের কমিটি ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা করে ফেলেছে। দেশে বর্তমানে ভ্যাকসিন রাখার জন্য যে ২৮ হাজার কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে, করোনার ভ্যাকসিন রাখার জন্য সেগুলিই ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন: কৃষি আইন নাকচ, বিল পাশ পঞ্জাবে
গত ১০ মাসে দেশে মেডিক্যাল অক্সিজেনের কোনও ঘাটতি নেই বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেপ্টেম্বরে মেডিক্যাল অক্সিজেন উৎপাদনের পরিমাণ ছিল দৈনিক ৬৮৬২ মেট্রিক টন। আশা করা হচ্ছে, অক্টোবরের শেষে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৭১৯১।
এ দিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬,৭৯০। যা প্রায় গত তিন মাসে সর্বনিম্ন। দৈনিক মৃতের সংখ্যা গত কালের থেকে সামান্য বেশি (৫৮৭)। মোট মৃতের সংখ্যা ১,১৫,১৯৭। আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যার (৬৭,৩৩,৩২৮) নিরিখে বিশ্বে প্রথম স্থানে ভারত। সুস্থতার হার ৮৮.৬৩%। করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্য ক্রমতালিকায় দ্বিতীয়। এখনও পর্যন্ত দেশে ৯.৬ কোটিরও বেশি করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। অন্য দিকে প্রতি ১০ লক্ষে ভারতে মৃত্যুর হার ৮৩। যা বিশ্বে সর্বনিম্ন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যাও কমে দাঁড়িয়েছে ৭,৪৮,৫৩৮ (৯.৮%)। মোট অ্যাক্টিভ রোগীর ৬৪ শতাংশই ছ’টি রাজ্যে (মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ)।
আরও পড়ুন: সতর্কতায় শিথিলতা নয়, বার্তা মোদীর
এই রাজ্যগুলির যে জেলাগুলিতে সংক্রমিতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, তার এক তালিকা প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি রয়েছে তালিকায়।