Maharashtra Bus Accident

মহারাষ্ট্রে বাস দুর্ঘটনার কারণ কী? জাতীয় সড়কের পরিকাঠামো নিয়ে ভিন্ন সুর শিন্ডে, ফডণবীসের

মহারাষ্ট্রের বাস দুর্ঘটনার পর শিন্ডে মৃদ্ধি মহামার্গ এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও, সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে ইতিবাচক বার্তাই দিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী ফডণবীস।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

মুম্বই শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ১৩:৫০
Share:

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (বাঁ দিকে) এবং উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। —ফাইল চিত্র।

মহারাষ্ট্রের বাস দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের অন্দর থেকেই দু’রকমের মত উঠে এল। মহারাষ্ট্রের সমৃদ্ধি মহামার্গ এক্সপ্রেসওয়েতে (মুম্বই-নাগপুর এক্সপ্রেসওয়ে) বাস দুর্ঘটনায় ইতিমধ্যেই ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। ওই সড়কে একাধিক দুর্ঘটনার পর জাতীয় সড়কের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয়। এই প্রসঙ্গে মুখ খুলে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা প্রধান একনাথ শিন্ডে জানান, সমৃদ্ধি মহামার্গ এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হবে। অন্য দিকে মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস বলেন, “জাতীয় সড়কের নির্মাণ সংক্রান্ত গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত নয়।” অনেকেই মনে করছেন এই বক্তব্যের মাধ্যমে জাতীয় সড়কের পরিকাঠামোগত সমস্যার যে অভিযোগ উঠছে, তা খারিজ করে দিতে চেয়েছেন ফডণবীস। অন্য দিকে, অভিযোগ এবং ক্ষোভের মুখে সড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন শিন্ডে।

Advertisement

এই ঘটনায় মহারাষ্ট্রের বিজেশি-শিবসেনা শাসকজোটের মধ্যে তালমিলের অভাবটাই বেআব্রু হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন মরাঠা রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। বিরোধী শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে), কংগ্রেস এবং এনসিপির তরফে বার বার দাবি করা হয়েছে, ইডি, সিবিআইয়ের মতো তদন্তকারী সংস্থার ভয়েই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছেন শিন্ডেরা। মহারাষ্ট্রের পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত এই জোট টিকবে না বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেন বিরোধী জোটের কোনও কোনও নেতা। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর দুই রকম বক্তব্য ঘিরে জল্পনা ছড়িয়েছে। মনে করা হয়েছে, কেন্দ্রের শাসকদলের নেতা হিসাবেই জাতীয় সড়কের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দিতে চেয়েছেন ফডণবীস। অন্য দিকে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে সড়কের নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন শিন্ডে।

শুক্রবার গভীর রাতে কী ভাবে যাত্রিবোঝাই বাসটিতে আগুন লাগল, তা নিয়ে একাধিক বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে আগুনে ঝলসে যাওয়া বাসটি থেকে যে কয়েক জন কোনও রকমে পালিয়ে আসতে পেরেছেন, তাঁদের এক জন জানান, ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা। ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরাও। প্রাণে বেঁচে ফেরা এক যাত্রী জানান, প্রচণ্ড শব্দে বাসের একটি চাকার টায়ার ফেটে যায়। তার পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসটিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। প্রাণ বাঁচাতে পিছনের একটি জানলা ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিন-চার জন যাত্রী। বাকিরা সেই চেষ্টা করেও সফল হননি। বাসের ভিতরেই ঝলসে মৃত্যু হয় তাঁদের। সে সময় রাস্তা দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলিকে সাহায্যের জন্য থামানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কোনও গাড়ি থামেনি বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মহারাষ্ট্রের যবৎমল থেকে পুণে যাচ্ছিল বাসটি। বাসটিতে প্রায় ৩৩ জন যাত্রী ছিলেন। শুক্রবার রাত ২টো নাগাদ বাসটিতে হঠাৎ করে আগুন লেগে যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে নিহতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার গভীর রাতে বাসটি যাত্রীদের নিয়ে ফিরছিল। হঠাৎই বাসের একটি টায়ার ফেটে যায়। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনের একটি খুঁটিতে ধাক্কা মেরে বাসটি উল্টে যায়। আগুন ধরে যায় বাসের ডিজেল ট্যাঙ্কে। ভিতরেই আটকা পড়ে যান বাসযাত্রীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement