বাজেট অধিবেশনের আগে সর্বদলীয় বৈঠক। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
গত ১০ বছরে যে ছবি দেখা যায়নি, নতুন লোকসভার বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগে, আজ সর্বদলীয় বৈঠকে তা দেখা গেল। সংখ্যায় আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী বিরোধী শিবির নিজেদের দাবিতে সরগরম করে রাখল বৈঠক। আসন্ন অধিবেশনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার দাবিতে সরব হলেন ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের বিভিন্ন শরিক দলের নেতারা।
২১ জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য তৃণমূলের কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও বার যা দেখা যায় না, মোদী সরকারের ‘বি দল’ হিসেবে চিহ্নিত তথা সদ্য রাজ্যের (ওড়িশা) ক্ষমতা খোয়ানো সেই বিজু জনতা দলও (বিজেডি) বৈঠকে নিজেদের দাবির কথা শুনিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে।
রাজনাথ আজ সভাপতিত্ব করেন সর্বদল বৈঠকে। বিরোধী নেতা, সাংসদদের মধ্যে আজ বৈঠকে ছিলেন কংগ্রেসের কে সুরেশ, গৌরব গগৈ, জয়রাম রমেশ এবং প্রমোদ তিওয়ারি, আপের সঞ্জয় সিং, ওয়াইএসআর কংগ্রেস-এর ভি ভি রেড্ডি, এসপি- র রামগোপাল যাদবরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ানও ছিলেন বৈঠকে।
নিট পরীক্ষায় কারচুপি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে সুর চড়ান গৌরব। পাশাপাশি কংগ্রেসের দাবি, এই অধিবেশনে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন হোক। কাঁওয়ার যাত্রায় দোকানের মালিকের নাম সাইনবোর্ডে লেখার নির্দেশিকা নিয়ে চলছে উত্তরপ্রদেশে বিতর্ক। আজ তার বিরোধিতা করে রামগোপাল যাদব মুখ খোলেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই নির্দেশে পেটে টান পড়ার উপক্রম হবে সেখানকার মুসলিম ব্যবসায়ীদের। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, 'আমাদের সংবিধান সর্বদাই সকল জাতিকে সমান অধিকার দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার যে কাজ করছে, তা সংবিধান-বিরোধী।'
আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ সর্বদলীয় বৈঠকের পর বলেন, "বিহারের জন্য বিশেষ মর্যাদা চেয়েছে জেডিইউ। ওয়াইএসআর কংগ্রেস চেয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশেষ মর্যাদা। কিন্তু, চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপি মুখ খোলেনি বৈঠকে।"
মোট ৪৪টি রাজনৈতিক দলের ৫৫ জন নেতা এ দিন উপস্থিত ছিলেন। জয়রামের কথায়, “দেশের রাজনৈতিক আবহাওয়া কী ভাবে বদলে গিয়েছে। সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেডি-র নেতারা, বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁদেরই করা ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইস্তাহারের কথা! যে ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ওড়িশাকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “সর্বদলীয় বৈঠকে সব নেতাই নির্বিশেষে দাবি করেছেন, সেন্ট্রাল হল আবার খুলে দেওয়া হোক, যেখানে সাংসদেরা নিজেদের মধ্যে মেলামেশা করতে পারবেন।”