ফাইল চিত্র।
মতাদর্শের পার্থক্য সত্ত্বেও যে পারস্পরিক আস্থা অর্জন করা যায়, সেটাই গণতন্ত্রের শক্তি বলে বর্ণনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজস্থানের বন্সওয়ারা, সিরোহি, দৌসা এবং হনুমানগড়ে চারটি মেডিক্যাল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং জয়পুরে সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব পেট্রোকেমিক্যালস টেকনোলজি উদ্বোধনের অনলাইন অনুষ্ঠানে তিনি বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্দিষ্ট ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত। গহলৌত তার আগে জোধপুরে একটি চিকিৎসা সরঞ্জাম নির্মাণ পার্ক এবং কোটাতে ওষুধ নির্মাণ পার্কের প্রস্তাবিত প্রকল্পে ছাড়পত্র দিতে মোদীকে অনুরোধ করেছিলেন। কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ ওষুধ উৎপাদন সংস্থা আরডিপিএল-এর পুনরুজ্জীবনের জন্যও অনুরোধ জানান। এই কথার সূত্র ধরেই মোদী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনছিলাম। উনি অনেকগুলো প্রকল্পের লম্বা তালিকা দিয়েছেন। আমার প্রতি এতটা আস্থা দেখানোর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ওঁর মতাদর্শ, ওঁর দল আমার মতাদর্শ, আমদর দলের চেয়ে আলাদা হতে পারে, কিন্তু এই মিত্রতা, বিশ্বাস আর আস্থাই গণতন্ত্রের খুব বড় শক্তি।’’
কংতগ্রেসে ঘোর অন্তর্কলহ এবং দল বদলের চলতি মরসুমে মোদীর এই বিরোধী-দরদি মন্তব্য রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কাছে আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে। বিরোধীদের কেউ কেউ ঘরোয়া ভাবে কটাক্ষ করে এও বলছেন, যে কোনও বিষয়কেই নিজের দিকে টেনে এনে আত্মপ্রচারে কাজে লাগান মোদী। এ দিনের বক্তব্যও তারই নিদর্শন।
বক্তৃতার বাকি অংশে মোদী জোর দেন দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে। গুজরাতে তাঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকে শুরু করে তাঁর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে কত কাজ করেছে, তার খতিয়ান তুলে ধরেন। দেশের প্রতিটি জেলায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
মোদী বলেন, ‘‘অতিমারি বিশ্ব জুড়েই স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের জন্য একটা বড় শিক্ষা। ভারতও নিজের শক্তি এবং স্বাবলম্বিতা বাড়াতে বদ্ধপরিকর। আজকের অনুষ্ঠান সেই কাজেরই অঙ্গ।’’ তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০১৪ সালে ভারতে স্নাতক-স্নাতকোত্তর মিলিয়ে ৮২ হাজার আসন ছিল ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য। এখন সেটা এক লক্ষ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। ৬টা থেকে বেড়ে ২২টা এমস হয়েছে। ১৭০টা নতুন মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে, আরও ১০০টার কাজ চলছে। পূর্বতন মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার বদলে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত, আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্প এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্য কার্ড হয়েছে। মোদী দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তিনি যে সব অসুবিধা চিহ্নিত করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী হয়ে সেগুলোই দূর করতে চেয়েছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়াও।