অমরেন্দ্র সিংহ। ফাইল চিত্র।
বুধবার অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের পরেই বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনা শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের বাড়িতে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের আগমনের পরে সেই জল্পনা আরও জোরাল হয়। কিন্তু বেলা গড়াতেই অমরেন্দ্র জানিয়ে দিলেন তিনি বিজেপি-তে যাচ্ছেন না। তবে সেই সঙ্গেই একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁর স্পষ্ট ঘোষণা, ‘‘আমি আর কংগ্রেসে থাকব না।’’
গত ১৮ সেপ্টেম্বর চণ্ডীগড়ের রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল বানোয়ারিলাল পুরোহিতের কাছে ইস্তফা দেওয়ার পরেই ‘বিকল্প পথের’ কথা বলে কংগ্রেস ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পঞ্জাব রাজনীতির ‘ক্যাপ্টেন’। তার আগে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে জানিয়েছিলেন, অপমান সহ্য করে তিনি আর দলে থাকতে চান না। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আমি এখনও কংগ্রেস আছি। তবে আর থাকবে না। ইতিমধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছি।’’
কেন এমন সিদ্ধান্ত? অমরেন্দ্রের জবাব, ‘‘"আমি ৫২ বছর ধরে রাজনীতি করছি। আমার নীতি এবং আদর্শবোধ রয়েছে। আমার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সকাল সাড়ে ১০ টায় কংগ্রেস সভাপতি বলছেন, ‘আপনি পদত্যাগ করুন’। আমি কোন প্রশ্ন করিনি। বলেছিলাম, এক্ষুণি ইস্তফা দেব। বিকেল ৪টেতে আমি রাজ্যপালের কাছে গিয়ে পদত্যাগ করলাম। যদি আপনি ৫০ বছর পর আমাকে সন্দেহ করেন এবং আমার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে থাকে, তা হলে আমার দলে থাকার কী প্রয়োজন!’’
অমরেন্দ্রর দাবি, দিল্লিতে শাহের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি জানিয়েছেন, কোনও অবস্থাতেই বিজেপি-তে যোগ দেবেন না। পাশাপাশি, পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে নভজোৎ সিংহ সিধুর ইস্তফার প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘উনি একজন অপরিণত রাজনীতিক। নিঃসঙ্গ ক্রীড়াবিদ। দলকে ভোটে পরিচালনার ক্ষমতা ওঁর নেই।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বৃহস্পতিবার অমরেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকের পরেই শাহের সঙ্গে দেখা করতে যান ডোভাল। এর পরে জল্পনা তৈরি হয়ে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে। যদিও অমরেন্দ্র ডোভালের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে কিছু বলেননি।
আশির দশকে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে সেনা অভিযানের প্রতিবাদে কংগ্রেস ছেড়েছিলেন পাটিয়ালার রাজ পরিবারের সন্তান তথা প্রাক্তন সেনা অফিসার অমরেন্দ্র। যোগ দিয়েছিলেন শিরোমণি অকালি দলে। তবে কয়েক বছর পরে ফের কংগ্রেসে ফিরেছিলেন তিনি। এ বার সিধুর সঙ্গে মতবিরোধের জেরে মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারাতে হয় অমরেন্দ্রকে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চে পঞ্জাবে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত অমরেন্দ্র দল ছাড়লে কংগ্রেস বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।