টিনের ছাদে বরফ-বিন্দু। —নিজস্ব চিত্র।
ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে চমকে উঠেছিলেন কলকাতা থেকে আসা পর্যটক অজয় সাহা। তাঁর কটেজের ঠিক বাইরে একটা টিনের ছাউনি ‘বরফে’ সাদা হয়ে আছে।
ম্যাকলাস্কিগঞ্জের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা গত কাল রাতেই মালুম হয়েছিল অজয়বাবুদের। কিন্তু তা বলে ম্যাকলাস্কিগঞ্জে বরফ! সঙ্গে সঙ্গে কটেজের বাকি পর্যটকদের ডেকে তুলে তিনি দেখান সেই দৃশ্য। মোবাইলে ছবিও তোলেন। রাঁচীর মৌসম বিভাগের ডিরেক্টর বি কে মণ্ডল বলেন, ‘‘পাপড়ির মতো বরফের যে আস্তরণ ম্যাকলাস্কিগঞ্জের কয়েকটি জায়গায় পড়েছে সেটা আসলে শিশির জমা বরফ। একটু বেলা হলেই তা উবে যায়।’’
বরফের ওই মিহি স্তর ম্যাকলাস্কিগঞ্জের জোভিয়া এলাকার ওই কটেজেই শুধু নয়, গঞ্জ ঘেঁষা চাট্টি নদীর ধারে নিমিয়া এলাকাতেও আজ ভোর-রাতে দেখা গিয়েছে। গত কাল থেকেই গোটা ঝাড়খণ্ড জুড়ে নামছে পারদ। রাঁচীর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাঁচী সংলগ্ন কাঁকের তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ২.৪ ডিগ্রিতে। ম্যাকলাস্কিগঞ্জের তাপমাত্রা মাপার কোনও সরকারি ব্যবস্থা না থাকলেও এলাকার অনেক বাড়িতে তাপমাত্রা মাপার জন্য রাখা আছে থার্মোমিটার। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, গত কাল রাতে সেই থার্মোমিটারে পারদ শূন্য ছুঁয়েছিল। এক কটেজ মালিক রানা অগ্নির দাবি, ‘‘ভোর চারটে নাগাদ পারদ শূন্যের কাছে চলে এসেছিল।’’
শূন্য না হলেও ম্যাকলাস্কিগঞ্জের তাপমাত্রা গত রাতে এক- দুই ডিগ্রির আশপাশেই ঘোরাফেরা করছিল বলে মনে করছেন আবহাওয়া অধিকর্তা বি কে মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, তাপমাত্রা দু’ডিগ্রি বা তার কম হয়ে গেলেও অনেক সময় শিশির জমে এরকম হালকা বরফ দেখা যায়। তবে খুবই ক্ষনস্থায়ী এই বরফ।
ক্ষনস্থায়ী হলেও এই দেখেই আপ্লুত পর্যটকরা। এক পর্যটক বলেন, ‘‘কলকাতা থেকে এত কাছে বরফ দেখতে পাব ভাবিনি। দুধের স্বাদ ঘোলে তো মিটল!’’