বিজেপি নেতা আশিস শেলার।—ছবি পিটিআই।
মুম্বইয়ে সূর্য ওঠে সাতটার কিছু আগে। অথচ কাল দেখা গেল, সাতটার এক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর শপথ শেষ।
বিজেপির এই ‘সার্জিকাল স্ট্রাইক’ নিয়ে কাল থেকেই লড়াকু বিরোধী শিবির। কখন বিজেপি সরকার গড়ার দাবি জানাল? অজিত পওয়ার কত জন এনসিপি বিধায়কের স্বাক্ষর দিলেন? রাজ্যপাল তা কখন যাচাই করলেন? কখন মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নেওয়ার সুপারিশ হল? কখন দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভা বসল? কখন রাষ্ট্রপতি তাঁর শাসন তুলে নিলেন? এক রাতে বিদ্যুৎ গতিতে এত সব কাজ? কেন, কখন, কী ভাবে? শিবসেনার সঞ্জয় রাউত তো বলেই ফেললেন, ‘‘রাতে করা কোনও কাজ শুভ হয় না কখনও। রাতে শুধু পাপ হয়।’’
কোথাও যেন আঁতে ঘা লেগেছে বিজেপির। এখন শিবসেনাই তাদের প্রধান ‘প্রতিপক্ষ’। বিজেপি মনে করে, তারাই যত ‘নষ্টের গোড়া’। আবার গভীর রাতে ‘পাপ’ করেছে বিজেপি, এ বদনামও ঘোচাতে হবে। সাত-পাঁচ ভেবে বিজেপি এক নতুন যুক্তি সামনে নিয়ে এল— রাম প্রহর।
মহারাষ্ট্র নিয়ে এখন দলের যা কিছু বলার, তার ভার মুম্বইয়ের বিজেপি নেতা আশিস শেলার। তিনি বললেন, ‘‘শিবসেনা বলছে, শপথ নাকি গভীর রাতে হয়েছে। আদৌ নয়। আমরা সকলে ভোরবেলায় (আরএসএসের) শাখায় যাওয়া লোক। আমাদের আস্থা অনুসারে ওই সময়টি ‘রাম প্রহর’। শিবসেনা কী করে এই ‘রাম প্রহর’-এর মূল্য বুঝবে? তারা তো এখন ভগবান রাম-কেই ভুলে গিয়েছে।’’
উদ্ধব ঠাকরে যখন থেকে কংগ্রেসের হাত ধরার তোড়জোড় করছেন, তখন থেকেই খেপে গিয়েছে বিজেপি। বলতে শুরু করেছে, হিন্দুত্ব বিসর্জন দিচ্ছে সেনা। বালসাহেব ঠাকরের আদর্শও ভুলতে বসেছে। কংগ্রেস সম্পর্কে শিবসেনার প্রাণপুরুষের কী অভিমত ছিল, তা-ও আর মনে রাখছে না। ‘রাম প্রহর’-এর যুক্তি সামনে রেখে এখন উদ্ধব ঠাকরেকে হিন্দুত্ব-কর্মসূচি বিসর্জনের খোঁচাও দিচ্ছে বিজেপি।
কিন্তু অষ্ট প্রহরের ঠিক কোন সময়টি ‘রাম প্রহর’? বলতে পারছেন না বিজেপিরই অনেকে!