সনিয়া গান্ধী এবং ডেরেক ও ব্রায়ান। — ফাইল চিত্র।
চলতি বছরের শুরুতে গোয়ায় বিধানসভা ভোটের পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। গোয়ায় তৃণমূলের প্রচারের অন্যতম কান্ডারি ছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সেই ডেরেকই কংগ্রেসের সনিয়া গান্ধীকে কর্নাটকের বিধানসভা ভোটে জয়ের আগাম অভিনন্দন জানিয়ে রাখলেন।
সব ঠিক থাকলে আগামী বছর কর্নাটকে ভোট। সদ্য অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচনে হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা ভোটে জেতার পরে কংগ্রেস সর্বশক্তি দিয়ে কর্নাটক জয়ের জন্য ঝাঁপাতে চাইছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে সোমবারই রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, গত কাল সকালেই সংসদ ভবনে সনিয়া, খড়্গের সঙ্গে ডেরেকের দেখা হয়। সংসদ হামলার বর্ষপূর্তিতে শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান চলছিল। সূত্রের খবর, ডেরেক ‘অভিনন্দন’ জানানোয় সনিয়াও ধন্যবাদ জানান।
ডেরেক তখন জানান, তিনি হিমাচলে কংগ্রেসের জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছেন না। আগামী বছর কর্নাটকে জয়ের জন্য ‘আগাম অভিনন্দন’ জানিয়ে রাখছেন। সনিয়া শুনে বলেন, খুবই ভাল কথা। শুধু চিন্তা হল, কংগ্রেসের নেতারা যেন অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে না পড়েন।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, কর্নাটক বিধানসভার ২২৪টি আসনের মধ্যে প্রদেশ কংগ্রেস ১৩৫টি আসন জেতার স্বপ্ন দেখছে। শুধু সেই ‘আত্মবিশ্বাস’ নয়, কর্নাটকের দুই নেতা, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার ও পরিষদীয় দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার মধ্যে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, তা নিয়ে সংঘাতও কংগ্রেসের চিন্তার কারণ। ভোটে জেতার আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে এই লড়াইকেই ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কর্নাটক খড়্গের নিজের রাজ্য। তিনিও এ নিয়ে চিন্তিত।
২০১৮-র বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেও ৮০টি আসন জিতেছিল। বিজেপি পেয়েছিল ১০৪টি আসন। ত্রিশঙ্কু বিধানসভায় কংগ্রেস জেডিএসের সঙ্গে জোট করে সরকার গড়লেও বিজেপি বিধায়ক ভাঙিয়ে নেওয়ায় সেই সরকার টেকেনি। এ বার কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, কর্নাটকে জিতলে লোকসভা ভোটে লড়াইয়ের আর্থিক রসদ নিয়ে চিন্তা থাকবে না। খড়্গে তাই শিবকুমার, সিদ্ধারামাইয়াকে একসঙ্গে রাজ্য সফরে বার হতে রাজি করিয়েছেন। তাঁদের বলা হয়েছে, ভোটে জেতার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পদের ফয়সালা হবে।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়ার কথা থেকে অবশ্য স্পষ্ট, বর্তমান কংগ্রেস সভাপতির রাজ্য নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে।