কুণাল কামরা। —ফাইল ছবি।
যে স্টুডিয়ো থেকে কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা একনাথ শিন্দেকে নিয়ে মশকরা করেছিলেন বলে অভিযোগ, সেই স্টুডিয়োটি এ বার ভাঙতে শুরু করল বৃহন্মুম্বই পুরনিগম (বিএমসি)। সোমবার দুপুরে পুরসভার কয়েক জন কর্মীকে মুম্বইয়ের খার এলাকার ওই স্টুডিওতে হাতুড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
অন্য দিকে, যাঁকে ঘিরে এত বিতর্ক, সেই কুণাল অবশ্য নিজের মন্তব্যে অনড়। ‘এনডিটিভি’-র প্রতিবেদন অনুসারে, কুণাল পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি তাঁর ‘গদ্দার’ মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত নন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস সোমবার সকালে কুণালকে ক্ষমা চাইতে বলেন। প্রতিবেদন অনুসারে, কুণাল পুলিশকে জানিয়েছেন, একমাত্র আদালত নির্দেশ দিলেই তিনি ক্ষমা চাইবেন।
‘নয়া ভারত’ নামের একটি অনুষ্ঠানে বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিদ্রুপাত্মক কিছু মন্তব্য করেন কুণাল। শিন্দের অবস্থান বদল নিয়েও কটাক্ষ করেন। কুণালেরই পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, একটি জনপ্রিয় হিন্দি গানের নকল করে শিন্দের অঙ্গভঙ্গি এবং শারীরিক গঠন বর্ণনা করছেন তিনি। এক জায়গায় শিন্দেকে ‘গদ্দার’ বলেও উল্লেখ করা হয়। যদিও সেখানে কোথাও কুণালকে শিন্দের নাম করতে শোনা যায়নি। (এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
এই কৌতুক অনুষ্ঠানটি হয়েছিল ‘হ্যাবিট্যাট’ স্টুডিয়োতে। সোমবার সকালেই মহারাষ্ট্রের পরিবহণমন্ত্রী প্রতাপ সরনায়েক বিএমসি-র কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে ওই স্টুডিয়োয় তল্লাশি চালানোর নির্দেশ দেন। বিএমসি সূত্রে খবর, স্টুডিয়োটি জবরদখল করা জায়গার উপর তৈরি হয়েছিল। স্টুডিয়োটি যে হোটেলের ভিতর রয়েছে, সেখানে আগেই ভাঙচুর চালিয়েছিলেন শিবসেনার বেশ কয়েক জন কর্মী-সমর্থক। এই ঘটনায় শিন্দেসেনার ১১ জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে অবশ্য প্রত্যেকেই জামিন পান।
শিন্দের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার নেতা-কর্মীদের এই আচরণের নিন্দা করেছে বিরোধী কংগ্রেস, উদ্ধবসেনা। কুণালের পাশে দাঁড়িয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে, আদিত্য ঠাকরে, সঞ্জয় রাউতেরা। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা উদ্ধবসেনার প্রধান উদ্ধব বলেন, “আমি মনে করি না কুণাল কামরা কোনও ভুল করেছেন। বিশ্বাসঘাতক তো বিশ্বাসঘাতকই হয়।” প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুলাই মাসে উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত শিবসেনা থেকে অনুগত বিধায়কদের ভাঙিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মেলান শিন্দে। পরিষদীয় শক্তির বিচারে শিন্দের সেনাকেই ‘আসল’ শিবসেনার তকমা দেয় নির্বাচন কমিশন।