গুঁড়িয়ে যাচ্ছে যমজ অট্টালিকা। ছবি— পিটিআই।
রবিবার আলো ফোটার আগেই নয়ডার যমজ অট্টালিকা ভাঙার শেষ মুহূর্তের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। আশেপাশের সমস্ত আবাসনের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজও সারা। শেষ মুহূর্তে তালিকা মেলাতে গিয়ে দেখা গেল, এক জনের খোঁজ নেই। কোথায় তিনি? চিরুনি তল্লাশির পর দেখা গেল, ভদ্রলোক তখনও ঘুমে কাদা। দেখে কে বলবে, হাজার হাজার কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করে ভাঙা পড়বে পাশের বাড়ি!
নয়ডার এমারেল্ড কোর্টের যমজ অট্টালিকা ভাঙার সময় যেন আশেপাশের ১৫টি অট্টালিকার কোনও বাসিন্দা ধারেকাছে না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে তৈরি হয়েছিল একটি ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স’ (এসটিএফ)। সাত সদস্যের দলে ছিলেন বিশেষজ্ঞ ও আবাসনের বাসিন্দারা। প্রতিটি তলের প্রত্যেক বাসিন্দা যেন নির্ধারিত সময় সকাল ৭টার আগেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিল এসটিএফের উপর।
ঘড়িতে তখন ৭টা বাজতে কিছু ক্ষণ বাকি। এসটিএফ সদস্যরা শেষ বারের মতো তালিকা মিলিয়ে দেখে নিচ্ছেন, সবাইকে বার করা গিয়েছে কি না। তা করতে গিয়েই প্রাথমিক খটকা। কিছু একটা গোলমাল লাগছে যেন। আবার নতুন করে তালিকা মিলিয়ে দেখতে গিয়ে বোঝা গেল, জোড়া অট্টালিকা যে আবাসনে, সেই এমারেল্ড কোর্টেরই অন্য একটি অট্টালিকার একেবারে উপরের তলের একটি ফ্ল্যাটে এক ব্যক্তি তখনও রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তা কী করে সম্ভব! বার বার সাইরেন বাজানোর পাশাপাশি ঘরে ঘরে গিয়ে দেখেও এসেছেন এসটিএফ সদস্যরা।
নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে ওই নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটে যান এসটিএফ সদস্যরা। বহু ডাকাডাকি, দরজা ধাক্কাধাক্কির পর খোলে দরজা। জানা যায়, ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন। অ্যালার্মের আওয়াজ তাঁর কানেই ঢোকেনি। অতঃপর, তড়িঘড়ি তাঁকে ঘুম থেকে তুলে একবস্ত্রে আবাসন ছেড়ে বেরোন সকলে। হাফ ছেড়ে বাঁচলেন সবাই। পাশেই জানালার পর্দার ও পাশে তখনও দাঁড়িয়ে যমজ অট্টালিকা। ঘড়ির কাঁটা তখন সকাল ৭টা ছুঁইছুঁই।