প্রতীকী ছবি
ভীমা কোড়াগাঁও মামলায় বন্দি তেলুগু কবি ভারাভারা রাওয়ের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন পরিজন। বর্তমানে করোনা সংক্রমণ নিয়ে মুম্বইয়ের নানাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অশীতিপর। তেমনই এ রাজ্যে রাজনৈতিক বন্দিদের অসুস্থতা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিজনেরা। তবে কারা দফতরের দাবি, আবাসিকদের সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়।
মাওবাদী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত অন্তত ৭৬ জন রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বন্দি। তার মধ্যে ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সী সাত জন। অন্য কয়েক জন সেই অঙ্ক না ছুঁলেও অসুস্থ। লেখার হাত মন্দ নয় দমদম সেন্ট্রাল জেল বন্দি ৭০ বছরের অখিলের। অসুস্থ অবস্থায় বছর দশেক আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। বন্দি জীবনে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। বছর একাত্তরের অসীম পেশায় ইঞ্জিনিয়ার।
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বন্দি জীবনই সঙ্গী হৃদরোগী অসীমের। বর্তমানে বহরমপুর সেন্ট্রাল জেলের বন্দিদের আইনগত ব্যাপারে সাহায্য করেন তিনি।
মাওবাদীদের প্রযুক্তিগত সহায়তার অভিযোগে কলকাতা থেকে গ্রেফতার হন সদানলা। তাঁর ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, এক বার অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টি হলেও হার্টে এখনও ব্লক নিয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে দিন গুজরান করছেন ৭০ বছরের বিটেক পাশ করা ইঞ্জিনিয়ার। স্নায়ু থেকে হৃদরোগ-সহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন অঙ্ক পাগল অনুপ রায়। বর্তমানে
দমদম জেলের ঠিকানায় দিন কাটানো অনুপ ২০১৪ সালে ডানকুনি থেকে গ্রেফতার হন।
করোনা আবহে মুখাবরণ আর হাতশুদ্ধির দাবি করেছিলেন কল্পনা মাইতি। তা নিয়ে জেলে অন্দরে স্বাক্ষর অভিযান করছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনা রোডের বাসিন্দা। তারপরেই কল্পনাকে বাঁকুড়া জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অবশ্য ২০১০ সালের শেষ লগ্নে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে কল্পনা থাইরয়েড, স্পন্ডিলাইসিস-সহ নানা রোগে জর্জরিত হতে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসার সুযোগ পেতে নাজেহাল হতে হয় এ রাজ্যের প্রথম মহিলা হিসাবে সিপিআই (মাওবাদী) সদস্য হওয়া কল্পনা। তেলঙ্গানার বাসিন্দা বছর ৪৫’র পারো দৃষ্টিশক্তি প্রায় খোয়াতে বসেছেন, হারিয়েছেন শ্রবণক্ষমতা।
মাওবাদীদের অস্ত্র প্রযুক্তিতে সহায়তার অভিযোগে গ্রেফতার হন তবলা বাদক ৬৫ বছরের মোহন বিশ্বকর্মা। একই অভিযোগেই বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেল বন্দি বাপি মুদি। প্রায় সত্তর শতাংশ প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তাঁর। চোখের অবস্থা খারাপ হওয়ার সঙ্গেই মাথার যন্ত্রণা ক্রমেই বাড়ছে কাঠের কাজে দক্ষ বাপির। ব্যথার ওষুধ দেওয়া হলেও কোনও রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা হয়নি বলে অভিযোগ।
এপিডিআর নেতা রঞ্জিত শূরের বক্তব্য, ‘‘জেলে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রবীণ এবং অসুস্থদের মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন। দীর্ঘ বন্দি জীবনে এইসব বন্দিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে গিয়েছে।’’ যদিও কারা দফতরের কর্তাদের দাবি, সব সময় বন্দিদের প্রতি যত্নশীল থাকেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। করোনা সময়ে বাড়তি সতর্ক রয়েছেন তাঁরা।