দূষণের কারণে হাঁসফাঁস অবস্থা দিল্লিবাসীর। মাস্ক পরে রাস্তায় বেরোচ্ছেন মানুষজন। ছবি: পিটিআই।
আপাত ভাবে দিল্লির দূষণে জেরবার বাসিন্দারা এখনও পর্যন্ত আশার আলো দেখেননি। তারই মধ্যে মঙ্গলবার খানিক স্বস্তি দিয়েছিল রাজধানীতে বাতাসের গুণগত মান বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই)। মঙ্গলবার গুণগত মান খানিক বেড়ে ‘অতি খারাপ’ পর্যায়ে গিয়েছিল। বুধবার সকালে আবার তা ‘ভয়ানক’ পর্যায়ে পৌঁছল।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (সিপিসিবি)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৭টায় সামগ্রিক ভাবে দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মান ছিল ৪২১। লোদী রোড, জহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম, অরবিন্দ মার্গের মতো রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অন্য দিনের মতোই দৃশ্যমানতা ছিল অত্যন্ত কম। পরিসংখ্যান বলছে, বৃহত্তর দিল্লির মধ্যে বায়ুদূষণের হার সবচেয়ে বেশি নয়ডায়। সেখানকার বাতাসের গুণগত মান ৪৭৪। খারাপ পরিস্থিতি আরকে পুরম (৪৩৩), পঞ্জাবি বাগ (৪৬০)-এর মতো এলাকাতেও।
দিল্লির দূষণ নিয়ে মঙ্গলবারই কড়া মন্তব্য করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। হাঁসফাঁস করতে থাকা দিল্লির দূষণ নিয়ে দিল্লি এবং তার প্রতিবেশী রাজ্যগুলিকে ভর্ৎসনা করে সুপ্রিম কোর্ট। প্রত্যেক শীতে প্রতিবেশী রাজ্য পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় শস্যের গোড়া পোড়ানোই দিল্লির এই দূষণের মূল কারণ বলে মন্তব্য করে আদালত। তাই শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে এই দুই রাজ্যকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়। পঞ্জাব সরকারকে শীর্ষ আদালত বলে, “শস্যের গোড়া পোড়ানো এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। কী ভাবে করবেন সেটা আপনাদের বিষয়। আপনাদের কাজ। তবে এই কাজ এখনই বন্ধ হওয়া উচিত।”
রাজধানীর বাতাসের গুণগত মান যে শ্বাসরুদ্ধকর পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা ‘মানুষের স্বাস্থ্যকে খুন করার শামিল’ বলে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মান (একিউআই) গত এক সপ্তাহ ধরে চারশোর উপরে। যা অত্যন্ত ভয়ানক। পরিস্থিতি সামাল দিতে গাড়ির জোড়-বিজোড় নীতির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও রাজধানীর দূষণ পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ থেকে আরও খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, শস্যের গোড়া পোড়ানো তো বটেই, যানবাহনের ধোঁয়াও দিল্লির দূষণের অন্যতম আর একটি কারণ। আগামী শুক্রবার এ বিষয়ে শুনানি হবে। কী ভাবে শস্যের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করা যায়, বিকল্প উপায় কী— ইত্যাদি বিষয়ে আশু সমাধানের জন্য উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, পঞ্জাব এবং দিল্লি সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রকে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।