বিজেপির অভিযোগ নিয়ে সরব দিল্লি মহিলা কমিশনের ‘নিগৃহীতা’ প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। ফাইল চিত্র।
গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছিলেন দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল। তার পরই তাঁর অভিযোগকে ‘মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে কটাক্ষ করে বিজেপি। কেন্দ্রের শাসকদলের তরফে বলা হয়, দিল্লি পুলিশকে খাটো করতেই মিথ্যা অভিযোগ করছেন স্বাতী। শনিবার টুইট করে স্বাতী পাল্টা দাবি করলেন, তাঁর সম্পর্কে ‘নোংরা মিথ্যা’ কথা বলা হচ্ছে।
দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান টুইট করে লেখেন, “যাঁরা আমার নামে নোংরা মিথ্যা কথা রটাচ্ছেন, তাঁরা আমাকে ভয় পাওয়াতে চাইছেন। আমি জীবনে অনেক বার আক্রান্ত হয়েছি। তাতে আমি ভিতর থেকে আরও কঠিন হয়েছি। তাই কেউ আমার মুখ বন্ধ করতে পারবে না। আমি আজীবন লড়ে যাব।”
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টে ১১ মিনিটে দিল্লির এমসের কাছে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্বাতী। সেই সময় গাড়ি নিয়ে তাঁর কাছে যান হরিশ চন্দ্র নামে ৪৭ বছরের এক ব্যক্তি। মহিলা কমিশনের প্রধানকে জোর করে গাড়িতে ঢোকানোর চেষ্টা করেন ওই চালক। সেই সময় তিনি মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে অভিযোগ। স্বাতীর থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর দলের অন্য সদস্যেরা।
স্বাতীর অভিযোগ, গাড়িতে ওঠার প্রস্তাব ফেরানোর পর গাড়ি চালিয়ে কিছুটা চলে যান ওই ব্যক্তি। তার পর আবার ইউ-টার্ন নিয়ে তাঁর কাছে ফিরে আসেন। এর পর জোর করে স্বাতীকে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। এই সময় গাড়ির জানলার কাছে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা করেন স্বাতী। সেই সময় গাড়ির কাচ তুলে দেন অভিযুক্ত। তাতে আটকে যায় স্বাতীর হাত। অভিযোগ, এই অবস্থায় স্বাতীকে হিঁচড়ে প্রায় ১৫ মিটার যায় গাড়িটি। এর পর নিজেই গাড়ির কাচ থেকে হাত সরিয়ে প্রাণ বাঁচান স্বাতী।
স্বাতীর অভিযোগের জেরে দিল্লির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা উপরাজ্যপাল ভি কে সাক্সেনাকে এই প্রসঙ্গে একহাত নেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে পাল্টা মুখ খোলেন বিজেপির একাধিক নেতা-নেত্রী। বিজেপি নেত্রী শাজ়িয়া ইলমি টুইট করে বলেন, “একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আম আদমি পার্টি স্টিং অপারেশন চালিয়েছে। যার উদ্দেশ্য একমাত্র দিল্লি পুলিশকে কলঙ্কিত করা।” টিআরপি বাড়ানোর জন্য একটি বেসরকারি চ্যানেল কেন এই কাজ করবে এবং রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে একটি রাজনৈতিক দল নারীদের নিরাপত্তার মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে কেন হাতিয়ার করবে, এ নিয়েও সরব হন শাজ়িয়া। আর এক বিজেপি নেতা হরিশ খুরানা অভিযোগ তোলেন, ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পরেও স্বাতী কেন চুপ ছিলেন? দিল্লি বিজেপির কার্যকরী সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব জানান, স্বাতীকে নিগ্রহে অভিযুক্ত হরিশ আপের এক জন কর্মী। আপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে স্বাতী এই ‘নাটক’ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতেই নিজের অবস্থান জানিয়ে টুইট করলেন স্বাতী।